আজ, রবিবার | ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | সকাল ১০:৫১

ব্রেকিং নিউজ :

শ্রীপুরে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা ২ মেম্বর আটক

মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার কালিনগর গ্রামে টাকার বিনিময়ে ৯ বছরের এক শিশু ধর্ষণের ঘটনা মীমাংসা করার অভিযোগে দুই মাতবরকে আটক করেছে পুলিশ।

আটককৃতরা হচ্ছেন শ্রীপুর সদর ইউনিয়নের বর্তমান মেম্বর জয়ন্ত বিশ্বাস এবং সাবেক মেম্বর আবদুল মতিন। শ্রীপুর থানা পুলিশ সোমবার রাতে তাদের আটক করেছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, কালিনগর গ্রামের এক দরিদ্র কৃষকের ৯ বছরের শিশুটি বুধবার বিকালে প্রতিবেশী আরেকটি শিশুর সঙ্গে বাড়ির পাশে খেলা করছিল। এ সময় একই গ্রামের পূর্ণচন্দ্র মণ্ডলের ছেলে সনত মণ্ডল (৪৮) মেয়েটিকে প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে মেয়েটি চিৎকার দিলে সে পালিয়ে যায়। এ অবস্থায় মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে মা-বাবার কাছে অভিযোগ করে।

এক পর্যায়ে জয়ন্ত মেম্বরসহ স্থানীয় মাতবরদের কাছে এই খবর পৌঁছলে তারা মেয়েটির পরিবারকে থানা-পুলিশ করতে নিষেধ করে নিজেরাই সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন।

ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার বিকালে মন্দিরের পাশে আয়োজিত ওই সালিশে জয়ন্ত মেম্বর, মতিন মেম্বর, সরোজিত মাতবর, মনোজিত, বিষ্ণু বাড়ৌ উপস্থিত ছিলেন বলে এলাকাবাসী জানান।

নির্যাতনের শিকার মেয়েটির বাবা, চাচা ছাড়াও গ্রামের আরও অনেকে জানান, ওই সালিশে সনত মণ্ডলকে দোষী সাব্যস্ত করে মুচলেকা নেওয়া হয়; যাতে ভবিষ্যতে এমন কাজ আর না করে, কিন্তু তার কোনো শাস্তি দেওয়া হয়নি।

পাশাপাশি বৈঠক শেষে মেয়েটির পরিবারকে স্থানীয় মাতবররা ১০ হাজার টাকা দিতে চাইলে সেটি ফিরিয়ে দেওয়ায় তারা ভিকটিমের এক নিকটাত্মীয়ের কাছে ২০ হাজার টাকা গছিয়ে বিষয়টি চেপে যাওয়ার কথা বলেন।

মেয়েটির বড় চাচা বলেন, আমরা মেয়ের সম্মান বিক্রি করতে চাইনি; কিন্তু টাকা ফেরতও দেওয়ার উপায় নেই। সমাজে চলতে গেলে এসব মাতবরদের কথার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

শিশু নির্যাতনের ঘটনা সালিশ বৈঠকে মিমাংসার বিষয়ে জানতে চাইলে জয়ন্ত মেম্বর বলেন, অভিযুক্ত সনত মণ্ডলের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থ আদায়ের অভিযোগ সঠিক নয়।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে রবি ও সোমবার দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে সোমবার রাতেই সাালিশ বৈঠকের আয়োজনকারী দুই মেম্বর জয়ন্ত বিশ্বাস ও আবদুল মতিনকে আটক করেছে।

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুকদেব রায় ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে থানায় আনা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে গ্রেফতার দেখানো হবে।

শেয়ার করুন...




©All rights reserved Magura Protidin. 2018-2022
IT & Technical Support : BS Technology