মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : অত্যাধুনিক ইন্ট্রা-ন্যাজাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশেই এবার ন্যাজাল কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ব্রিটিশ বায়োমেডিকেল ফার্ম ভিরাকর্প এবং দেশের অন্যতম ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগ এই ন্যাজাল ভ্যাকসিন উৎপাদন করা হবে।
ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, ল্যাঙ্কাস্টার ইউনিভার্সিটির ভাইরোলজিস্ট এবং ভিরাকর্প-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ মুনিরের গবেষণার উপর ভিত্তি করে এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হচ্ছে।
এই ভ্যাকসিন ন্যাজাল স্প্রে-এর মাধ্যমে সহজে প্রয়োগ করা যায় এবং প্রচলিত কোল্ডচেইন পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে ভ্যাকসিনটি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বহন করা সম্ভব।
এই প্রসঙ্গে ভিরাকর্পের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুনির বলেন, এই ভ্যাকসিন সহজে পরিবহনযোগ্য এবং নাকের মাধ্যমে গ্রহণ করা যায় এবং এটি ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচির জন্য যে ভারী অবকাঠামো ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় তা কমিয়ে দেবে। বিশ্বের সবচেয়ে প্রত্যন্ত এলাকার অধিবাসীদের কাছেও এই ভ্যাকসিন সহজে পৌঁছানো যাবে।’
ইনসেপটা ভ্যাকসিন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির বলেন, ‘আমাদের কোম্পানী সবসময় নতুন ভ্যাকসিন উৎপাদনের পাশাপাশি অত্যাধুনিক উৎপাদন প্রযুক্তি অর্জন ও উন্নয়নের জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই যৌথ উদ্যোগের ফলে উন্নয়নশীল দেশ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনসাধারণের জন্য সহজে প্রয়োগযোগ্য ভ্যাকসিন উৎপাদন করা সম্ভব হবে।’ এখানে উল্লেখ্য যে, বর্তমানে ইনসেপ্টার বার্ষিক ১৮০ মিলিয়ন একক ডোজ বা ১ বিলিয়ন মাল্টি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদন করার সক্ষমতা রয়েছে।
ভিরাকর্প-এর সিইও জন চ্যাডউইক ইনসেপটাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে তাদের নেওয়া সাম্প্রতিক উদ্যোগসমূহ নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী। তিনি বলেন, আমাদের যৌথ উদ্যোগের ফলে সর্বাধিক মানের ভ্যাকসিন ¯^ল্পমূল্যে সর্বত্র সহজলভ্য করা সম্ভব হবে।
ড. মুনীর আরও বলেন, ‘ইনসেপটার সাথে এই অংশীদারিত্ব আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন উৎপাদন সম্ভব করবে যা যেকোন ধরনের সার্স কোভ-২ থেকে সুর¶া দেবে এবং এর বিস্তার প্রতিরোধ করবে। ড. মুনিরের দলের সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট, ডাঃ মোহাম্মদ রোহাইম বলেন, ‘ইন্ট্রান্যাজাল ভ্যাকসিনটি ক্লিনিক্যাল পরী¶ায় ব্যাপকভাবে যাচাই করা হয়েছে এবং কয়েক দশক ধরে চলমান পরীক্ষায় এর নিরাপত্তা প্রোফাইল নিশ্চিত হয়েছে।’
যুক্তরাজ্যের বায়োমেডিকেল ফার্ম ভিরাকর্প বিশ্বের সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষের কাছে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। ভিরাকর্প- এবং এর অধীনস্থ সংস্থাগুলি ভাইরাল সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে কাজ করছে, সেইসাথে যেখানে সাহায্য প্রয়োজন সেখানে মানবিক সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে।
২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত ইনসেপটা ভ্যাকসিন লিমিটেড বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে ভালো মানের ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রাথমিক উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ শুরু করে। এটি বাংলাদেশের প্রথম ভ্যাকসিন প্রস্ততকারী সংস্থা যেখানে একটি অত্যাধুনিক ফ্যাসিলিটি রয়েছে যা সম্পূর্ণরূপে ডাব্লিউএইচও-জিএমপি নীতিমালা এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। ইনসেপটা বিশ্বব্যাপী গবেষক এবং সমমনা উন্নয়ন সংস্থার সাথে প্রকৃত এবং ন্যায়সঙ্গত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার মাধ্যমে নিজস্ব সক্ষমতা উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছে।