মাগুরা প্রতিদিন : মাগুরার চাঞ্চল্যকর শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় বৃহস্পতিবার ৩৪২ ধারায় আসামীদের পরীক্ষা করা হয়েছে। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর প্রশ্নে সাফাই সাক্ষী দিতে রাজী না হলেও আসামীরা নিজেদের নির্দোষ এবং সুবিচার দাবি করেছেন।
দুপুর ১ টায় মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে আসামী পরীক্ষার জন্যে মামলাটির অভিযুক্ত চার আসামী হিটু শেখ, তার স্ত্রী জাহেদা বেগম এবং তাদের দুই ছেলে সজীব শেখ ও রাতুল শেখকে হাজির করা হয়।
এদিন বিচার কার্যের শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মুকুল বিগম সময়ে দেয়া ২৯ জন সাক্ষীর বক্তব্য আসামীদের পড়ে শোনান। পরে নিজেদের পক্ষে কোনো সাক্ষী উপস্থাপন করবেন কিনা কিংবা সাফাই সাক্ষী দেবেন কিনা জানতে চান।
মামলাটির রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মুকুল বলেন, আসামীরা সাফাই সাক্ষী দিতে রাজী না হওয়ায় আদালতের বিচারক এ মামলার যুক্তিতর্কের জন্যে ১২ মে তারিখ ধার্য করে দিয়েছেন। এরপর অতিদ্রæত সময়ের মধ্যে রায় ঘোষণা করা হবে আশা করছি।
তবে দুপুর দেড়টার দিকে আদালত থেকে বেরিয়ে আসার সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বরাবরের মতোই চিৎকার করে মামলাটির প্রধান আসামী হিটু শেখ বলেন, “বিটার বউ বিনাদোষে আমাদের ফাসাইছে। সেই আসল অপরাধী। আমরা নির্দেশ। আমাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই।”
১৩ মার্চ ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আছিয়া। এর আগে মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ^শুর বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ৬ মার্চ ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। ঘটনার পর প্রথমে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল এবং পরে ফরিদপুর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটায় নেয়া হয় ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।
ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার ৮ মার্চ শিশু আছিয়ার বোনের শ^শুর হিটু শেখ, শাশুড়ি জাহেদা বেগম, বোন জামাই সজিব শেখ এবং সজিবের বড় ভাই রাতুল শেখকে আসামী করে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় অভিযুক্ত ৪ জন আসামীই পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তাদের উপস্থিতিতেই চলছে বিচারিক কার্যক্রম।
এ মামলাটিতে ধর্ষণের ঘটনার সময় রাত ১টা ৩০ মিনিট উল্লেখ করা হয়। কিন্তু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাগুরা সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আলাউদ্দিন সরকার ১৩ এপ্রিল আদালতে যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন সেখানে ঘটনা সংঘটিত হওয়ার সময় সকাল ৮ টা ২০ থেকে ৯ টা ৩০ মিনিটের কথা বলা হয়েছে। যে বিষয়টির প্রতি নজর দিয়ে আসামী পক্ষ প্রথম থেকেই তদন্তের দাবি জানিয়ে এসেছেন। যদিও ১৫ মার্চ মামলার মূল আসামী হিটু শেখ এ ঘটনায় একাই জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।