মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : মাগুরায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ২০ তম গ্রেডের ১১টি পদে নতুন নিয়োগকৃতদের দায়িত্ব বণ্ঠন করা হয়েছে রবিবার। তবে এসব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের নিয়োগ কমিটির বিরুদ্ধে স্বজনপ্রিতি এবং অনিয়মের অভিযোগ করেছেন চাকরির আবেদনকারীদের অনেকে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৭ ডিসেম্বর মাগুরা জেলা প্রশাসকের সাধারণ প্রশাসন ও সার্কিট হাউজের ২০ তম গ্রেডের ৭ টি পদে ১১ জন নিয়োগের আবেদন পত্র আহ্বান জানিয়ে নেজারত শাখার পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
পরবর্তিতে লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষা শেষে ৩ জন নিরাপত্তা প্রহরী, ৫ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং ২ জন করে মালি ও ১ জন বেয়ারা নিয়োগ সম্পন্নের পর ১৮ এপ্রিলের নির্দিষ্ট স্মারকে পদায়ন করা হয়েছে।
তবে নিয়োগ কমিটির সদস্যরা সরকারি বিধি মোতাবেক আবেদনকারীদের আবশ্যিক শর্তসমূহ পূরণের বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে রহস্যজনক কারণে অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, নিয়োগকৃত ১১ জনের মধ্যে মালিপদে নিয়োগকৃত দুইজনের একজন হচ্ছেন আলমগীর হোসেন। মাগুরার সদর উপজেলার রায়গ্রাম পূর্বপাড়ার আবদুর রশিদ মোল্যার ছেলে আলমগীর গত ১ এপ্রিল সরকারি এ চাকরিতে যোগদান করলেও ১৮ এপ্রিল প্রেষণে তাকে নিয়োগ করা হয়েছে জেলা প্রশাসকের বাংলোস্থ কার্যালয়ে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, চাকরির আবেদন পত্র দাখিলের সময় আলমগীর হোসেন তার স্বপক্ষে যেসব কাগজপত্র দাখিল করেছেন সেগুলোর সত্যায়ন করেছেন মাগুরার নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মো: আল এমরান।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দায়িত্বশীল এই কর্মকর্তার সত্যায়িত জন্ম নিবন্ধন সনদে আবেদনকারির জন্ম তারিখ-পহেলা জানুয়ারি উনিশ শত একানব্বই উল্লেখ রয়েছে। ০১ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মাগুরা পৌরসভা ইস্যুকৃত ওই সনদে প্যানেল মেয়র মকবুল হাসান মাকুলের স্বাক্ষর রয়েছে। অথচ মাগুরা পৌরসভার জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মূল সার্ভারে তার জন্ম তারিখ পহেলা জানুয়ারি উনিশ শত একাশি রয়েছে। সেই হিসেবে চাকুরির নির্ধারিত বয়সসীমা ৩০ বছর উল্লেখ থাকলেও জালিয়াতি এবং অসততার আশ্রয় নিয়ে বয়স ১০ বছর কম দেখানো হয়েছে।
এতে সাময়িকভাবে এই জালিয়াতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা সাময়িকভাবে লাভবান হলেও এই পদের চাকরি গ্রহিতা ভবিষ্যতে বড় ধরণের দণ্ডের মুখে পড়বেন বলে অভিমত দিয়েছেন অভিজ্ঞরা।
এ অবস্থায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দায়িত্ববান কর্মকর্তাদের এমন দায়িত্বহীনতায় অনেকে তাদের নৈতিকতাবোধের প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন।
এদিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ২০ তম গ্রেডের নতুন ১১জন নিয়োগের ক্ষেত্রে অধিক স্বচ্ছতা রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মাগুরা জেলা প্রশাসক ডক্টর আশরাফুল আলম।
তবে কোনো ব্যত্যয় ঘটলে সেক্ষেত্রে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।