মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : করেনাকালে সকল ধরনের শিক্ষা ফি মওকুফের দাবী নিয়ে মাগুরায় বৃহস্পতিবার দুপুরে মানববন্ধন ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট মাগুরা জেলা শাখা।
সংগঠনের ৩৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা শাখার আহ্বায়ক ভবতোষ বিশ্বাস জয়ের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর কেন্দ্রীয় পাঠচক্র ফোরামের সদস্য প্রকৌশলী শম্পা বসু।
বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সংগঠক কেয়া বিশ্বাস ও ছাত্র ফ্রন্ট সংগঠক ঐশী বিশ্বাস।
সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ জানান, সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনের পরিপূরক ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিগর্ভ থেকে ১৯৮৪ সালের ২১ জানুয়ারি জন্ম নেয় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। সার্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, সেক্যুলার, একই পদ্ধতির গণতান্ত্রিক শিক্ষার দাবিতে জন্মলগ্ন থেকেই সোচ্চার এই সংগঠন শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বিরোধী আন্দোলন, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলন, জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলনসহ সকল প্রকার গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্বকারী ছাত্র সংগঠন হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে।
বক্তারা আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে গত বছরের মার্চ মাস থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। ফলে প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী শিক্ষাক্ষেত্র থেকে ঝরে যেতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করা হচ্ছে। দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর এনড্রয়েড ফোন, কম্পিউটার, ডাটা কেনার সামর্থ্য নেই।
গ্রাম অঞ্চলগুলোতে ইন্টারনেটের গতিও ভালো না। ফলে অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষেই অনলাইন ক্লাস করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার অধিকাংশ পরিবারের পক্ষেই গৃহশিক্ষক রেখে সন্তানদের পড়ানো সম্ভব নয়। এ অবস্থায় শিক্ষাক্ষেত্র থেকে ঝরে পড়া রোধ করতে গত ২৮ মে ২০২০ থেকে বাসদ ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মাগুরা জেলা শাখার পক্ষ থেকে বিনাবেতনে স্বেচ্ছাশ্রমের স্কুল অদম্য পাঠশালা পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু সেটা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
করোনার শুরু থেকেই শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের উদাসীনতা ও অবহেলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য চরম আকার ধারণ করেছে। ‘টাকা থাকলে শিক্ষা আছে, টাকা না থাকলে শিক্ষা নেই’-এই বাস্তবতায় শিক্ষা যে একটি অন্যতম মৌলিক অধিকার এ যেন আমরা ভুলতে বসেছি।
করোনার সময়ে অনেক অভিভাবক কাজ হারিয়েছেন, অনেকের বেতন কমে গেছে, রাষ্ট্রয়ত্ব পাটকল-চিনিকল বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ অনেক দাবি করার পরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন-ফি মওকুফ করা হয়নি। করোনাকালে দেশে শিশু শ্রম ও বাল্য বিবাহ বেড়ে গেছে।
বক্তারা আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতি ছাড়াও মাগুরা জেলায় শিক্ষার মানের বেহাল দশা দেখতে পাওয়া যায়। প্রতি বছরই যশোর বোর্ডের মধ্যে সর্বনিম্ন পাশের হার মাগুরায়। এই জেলায় কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নেই। স্কুল-কলেজের শিক্ষার মানও ভালো না।
শিক্ষাক্ষেত্রের এ সকল সংকট দূর করতে ঐক্যবন্ধ হওয়ার আহ্বান জানান সমাবেশের উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।