মাগুরা প্রতিদিন: মাগুরায় সদর উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামে ঘুমন্ত স্বামীর ঘরের দরোজা বন্ধ করে প্রথম স্ত্রীর দেয়া পেট্রোলের আগুনে স্বামী, দশ মাসের শিশু এবং শিশুটির মা মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছে।
এ ঘটনার পর সারাঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়লে প্রথম স্ত্রী সুমি খাতুন স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে নিজের দায় স্বীকার করে আত্ম সমর্পন করেছেন।
ঘরের মধ্যে আটকা পড়ে দগ্ধ স্বামী বাহারুল ইসলাম (৫০), দশ মাসের শিশু রোহান এবং শিশুটির মা লাভলি খাতুন (৩০) এর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
মাগুরার হাজরাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনসারুল ইসলাম জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে প্রথম স্ত্রী সুমি খাতুন ঘুমন্ত স্বামী বাহারুলের ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর রাতেই ফাঁড়িতে গিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন।
পেট্রোলের আগুনে দগ্ধ বাহারুল ইসলাম, তার স্ত্রী লাভলী খাতুন এবং তাদের দশ মাসের শিশু রোহানের প্রত্যেকের শরীরের ৩০ শতাংশের বেশি অংশ পুড়ে যাওয়ায় তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শনিবার দুপুরে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বাহারুল ইসলাম একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী। প্রায় পাঁচ বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করায় তার প্রথম স্ত্রী সুমি খাতুনের সঙ্গে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় স্ত্রী চলে গেলে বাহারুল আবার লাভলী খাতুনকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এতে পুরনো কলহ আরও বাড়তে থাকে।
শুক্রবার গভীর রাতে বাহারুল তার স্ত্রী লাভলী ও সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে, প্রথম স্ত্রী সুমি বাইরে থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে নিচ দিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে তাদের উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. এহসানুল হক মাসুম জানান, তিনজনেরই অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী জানান, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।