মাগুরা প্রতিদিন : আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বহিস্কৃত প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান, স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ একটি গোষ্ঠিকে নিয়ে মব তৈরি করে বিদ্যালয়ে হামলা ভাংচুর চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।
এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেন, নাহিদ মির্জা নামে একজন অভিভাবক সহ অন্তত ৬ জন আহত হয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়ে চলমান আসন্ন মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষাও ভণ্ডুল হয়ে যায় বলে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অভিভাবক, এলাকাবাসী এবং স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয় তহবিলের অর্থ তসরুপের দায়ে এ বছরের ৩ আগস্ট বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নানকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করা হয়। এ অবস্থায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন সহকারী শিক্ষক মুনীর হোসেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বহিস্কৃত প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে একটি গোষ্ঠীকে সাথে বিদ্যালয়ে হামলা চালায়। তারা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ঢুকে ল্যাপটপ, কম্পিউটার সহ অন্যান্য আসবাবপত্র ভাংচুরের পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনের উপর হামলা করে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় তাদেরকে বাধা দিতে গিয়ে নাকোল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মির্জা নাহিদ নামে নামে একজন অভিভাবকসহ আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এ ঘটনার পর বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসেন শিপন বলেন, পরীক্ষা চলাকালে এ বিদ্যালয়ের এক সময়ের প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা অনাকাক্সিখত। শুধু তাই নয় নিজের বহিস্কারের বিষয়টি মানতে না পেরে আবদুল মান্নান ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রবি খান এবং সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন ছাড়াও তার ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল ইসলাম, যুবলীগ কর্মী কুতুবুদ্দিন লাভলু ছাড়াও স্থানীয় একটি কিশোর গ্যাং এবং এলাকার চিহ্নিত কিছু মাদক ব্যবসায়ীকে সাথে নিয়ে বিদ্যালয়ে মব সৃষ্টি করেছে। এমনকি শ্রেণিকক্ষ থেকে শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীদের বের করে নানাভাবে উস্কে দিয়েছে যেটি খুবই নিন্দনীয়।
সাময়িকভাবে বহিস্কৃত প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান বলেন, আমার বহিস্কারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ নিয়ে বিদ্যালয়ে যোগদান করতে গিয়েছিলাম। খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমার সাথে ছিল। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেন আমাকে যোগদান করতে না দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা তাকে মারতে গেলে তিনি আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আর্থিক দূর্ণীতির দায়ে বহিস্কৃত শিক্ষক আবদুল মান্নান কিছু লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় তাদের হামলায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আহত হয়েছেন। বিষয়টি জানতে পেরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।