মাগুরা প্রতিদিন : মাগুরা-২ আসনে আলোচিত সকল নামকে ছাড়িয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি–এনসিপি’র জেলা কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম ওরফে খাজা তারিকের মনোয়ন পত্র আদায় করে নেওয়ার ঘটনা নিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব মোয়াজ্জেম হোসেনকে বাদ দিয়ে তার পরিবর্তে খাজা তারিকের নাম ঘোষণা করায় দলের অভ্যন্তরে এবং বাইরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। আবার এনসিপি’র অপর যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দৌলত মনোনয়ন পত্র জমাদানের পর থেকেই দলীয় প্রতীকের পক্ষে মাঠ ঘাট চষে বেড়ালেও সেও বঞ্চিত হওয়ায় বিস্মিত হয়েছেন অনেকে।
বুধবার রাজধানীতে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মুখ্য সংগঠক আখতার হোসেন প্রাথমিকভাবে মনোনীত ১২৫ জনের তালিকা প্রকাশ করেন। এই তালিকায় মোয়াজ্জেম হোসেনের বদলে মাগুরার খাজা তারিকের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তার আগের দিনই তাকে জেলা কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।
মাগুরা-২ আসন—যা সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন, শালিখা ও মহম্মদপুর নিয়ে গঠিত—সেখানে নতুন মুখ হিসেবে উঠে এসেছেন তারিকুল ইসলাম। রাজনীতিতে নবাগত হলেও এলাকায় তিনি শিক্ষক, লেখক, গবেষক, গীতিকার ও আধ্যাত্মিক চিন্তাবিদ হিসেবে পোস্টার–ব্যানারের মাধ্যমে নিজের পরিচয় তুলে ধর হয়েছে। এ নিয়েও এলাকায় নানা গল্প-সমালোচনার কথাও জানা গেছে। তার গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার দরিশোলই গ্রামে।
অন্যদিকে মোয়াজ্জেম হোসেন গত দেড় বছর ধরে নিজেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করে এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি তদবির বাণিজ্য, চাঁদাবাজি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আলোচিত হলেও তার অনুসারীরা মনে করেছিল শেষ পর্যন্ত তাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং এনসিপির মাগুরা জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দৌলতও দীর্ঘদিন ধরে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তবে সব প্রতিদ্বন্দ্বীকে পেছনে ফেলে ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় খাজা তারিকের নাম উঠে আসায় অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
ঘোষিত প্রার্থী তারিকুল ইসলাম বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে আমি নির্বাচনে এসেছি। দলের আস্থা অর্জন করায় নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানাই।
মোয়াজ্জেম হোসেন এ বিষয়ে বলেন, এনসিপি তার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছে। তরুণদের আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে দলটি গঠিত হলেও বর্তমানে তারা সেই অবস্থানে নেই। তাই এখন আর তাদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ নেই।
অন্যদিকে মনোনয়ন প্রত্যাশী দেলোয়ার হোসেন দৌলত জানান, প্রাথমিকভাবে একজনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী পরিবারের সদস্য। তার ভাই আসাদ আওয়ামীলীগের সাবেক মন্ত্রী বিরেন শিকদারের একজন একনিষ্ট কর্মী। বিগত সংসদ নির্বাচনে বিরেন শিকদারের নির্বাচনে সহযোগিতা করতে ডামি প্রার্থী হিসেবে নিজে প্রার্থী হয়েছিলেন। আমি বিশ্বাস করি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ঘোষিত প্রার্থীর সম্পর্কে তথ্য যাচাই–বাছাই করে নতুন সিদ্ধান্ত নেবেন।