মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শনিবার মাগুরায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় শনিবার বিকালে আছাদুজ্জামান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদ খান এমপি।
মাগুরা জেলা প্রশাসক ডক্টর আশরাফুল আলমের সভাপতিত্বে স্থানীয় ধর্মীয় ও সামাজিক প্রভাবক ব্যক্তিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সংলাপ অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা পুলিশ সুপার মোঃ জহিরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এএফএম আবদুল ফাত্তাহ, সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু, সহ-সভাপতি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু নাসির বাবলু, সাংগঠনিক সম্পাদক পৌর মেয়র খুরশীদ হায়দার টুটুল, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট প্রদ্যুত কুমার সিংহ, সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব কুণ্ডু।
সংলাপ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তাদের নিরাপত্তায় ‘সংখ্যালঘু নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়নের দাবি জানানো হয়।
অন্যদিকে সংলাপ অনুষ্ঠানের সম্মানিত অতিথি মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর পৃথক আইন প্রণয়নের চেয়ে মানুষের বিবেক বোধকে জাগ্রত করার পাশাপাশি শান্তির ধর্ম ইসলামের বার্তা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবার প্রস্তাব রাখেন।
সাইফুজ্জামান শিখর বলেন, ভারত, পাকিস্তান কোথায়ও সংখ্যালঘুরা নিরাপদে নেই। কোন আইন করে মানুষকে বসে রাখা যায় না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। যারা অন্ধকারে বাস করে তাদেরকে আলোর পথ দেখাতে হবে। আলোর বার্তাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। সেই লক্ষ্য পূরণেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামী ফাউণ্ডেশন গঠন করেছিলেন। এই ফাউণ্ডেশনের ব্যাপ্তি আরো বৃদ্ধি করতে হবে।
তিনি বলেন, এই দেশ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন হয়েছে। ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে। ১৯৭১ সালেই ফয়সালা হয়েছে, বাংলাদেশ কীভাবে চলবে, আর কীভাবে চলবে না। এটি ৩০ লক্ষ মানুষের রক্তে লেখা ঐতিহাসিক দলিল। এই বাংলাদেশ চলবে সাম্প্রদায়িকতার উর্ধ্বে। এই দেশ সকল সম্প্রদায়ের মানুষের। এখানে হিন্দু-মুসলিম সকলের অধিকার সমান। নিরাপত্তা আইন বরং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে আরও বিচ্ছিন্ন করে দেবে।
কোনো অশুভ শক্তির কাছে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত এই বাংলাদেশ পরাজিত হতে পারে না। আমরা কখনোই তাদের কাছে মাথানত করবো না বলেও সাইফুজ্জামান শিখর তার বক্তব্যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সংলাপ অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধান অতিথি ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদ খান, ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে সকলকে একসঙ্গে চলা এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে মাগুরার মুসলিম-হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ, মসজিদের ইমাম, মাদরাসা শিক্ষক, মন্দিরের পুরোহিতরা অংশ নেন।