বিশেষ প্রতিবেদক : খাবার হিসেবে মচমচে সিঙ্গারা কার না পছন্দ। ত্রিকোণ বা পিরামিড আকৃতির এই খাবার সবার কাছেই ভীষণ লোভনীয়। একটু খিদে মেটাতে দুপুরের আগে বা বিকেলে সিঙ্গারা অসম্ভব এক তৃপ্তি আনে। কিন্তু বর্তমান বাজারে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির এই কালে মাত্র ‘এক টাকা’ দামের একটা সিঙ্গারা পাওয়াতো বিস্ময়করই বটে। করোনা অভিঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তীতে এমন কোনো খাদ্য পণ্য নেই যার কমবেশি দাম বাড়েনি। কিন্তু মাগুরা সদর উপজেলার আঠারখাদা ইউনিয়নের গাংনালিয়া বাজারের মিষ্টি-চপ-সিঙ্গারা বিক্রেতা অসিত কমুার সাহার ওপর যেনো এসবের কোনো প্রভাব পড়েনি। তাই অসিত সাহা এখনও মাত্র এক টাকা দামে সিঙ্গারা খাওয়াচ্ছেন ক্রেতাদের।
মাত্র এক টাকা দামে একটি সিঙ্গারা Ñ অনেকেই একথা শুনে বিস্মিত হতে পারেন। কিন্তু একটাকা দামেই অসিত সাহা সিঙ্গারা বিক্রি করে থাকেন। অনেকদিন ধরেই তিনি এই দামে বিক্রি করছেন। আর এই কারণে অসিতের একটার সিঙ্গারা এখন ট্রেডমার্ক।
অসিতের এক টাকার সিঙ্গারা খেতে খুবই সুস্বাদু। তুলনামূলক ছোট আকৃতির এই সিঙ্গারাতে তিনি প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়েই তৈরি করেন। তবে সিঙ্গারার টেস্টটা একটু ভিন্ন। আর এ কারণেই অসিতের সিঙ্গারার চাহিদা অনেক বেশি। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ অসিতের ‘এক টাকার সিঙ্গারা’ খাওয়ার জন্য গাংনালিয়া বাজারে আসেন ছাউনির নিচে অসিত সিঙ্গারা বিক্রি করেন। তবে শুধু সিঙ্গারাই নয়, তাঁর ছোট দোকানে আরও পাওয়া যায় বুন্দিয়া, নিমকি, চপসহ মজাদার সব খাবার। সকাল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত এই দোকান চালান তিনি। এই দোকানই তাঁর সব। এই একই স্থানে ব্যবসা করছেন টানা ৩৭ বছর।
সরেজমিনে দেখা গেল অসিত পাশেই একটি কড়াই-এ সিঙ্গারা ভাজছেন। গরমগরম সিঙ্গারা তুলছেন আর বিক্রি করছেন। ক্রেতারা বিশটি, পঞ্চাশটি করে সিঙ্গারা অর্ডার দিচ্ছেন। অসিত সাহা ঝটপট সিঙ্গারার সাথে মশলা আর কুঁচি পেঁয়াজ দিয়ে প্যাকেট করে দিচ্ছেন। এত কম দামে সিঙ্গারা বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে অসিত সাহা বলেন, ‘আমার ব্যবসার লক্ষ্য হলো কম দামে বেশি বিক্রি করা।
দাম কম হলে ক্রেতারা বেশি করে কিনতে আগ্রহী হন। ফলে বেশি বিক্রি হলে আমার লাভ ভালো হয়। আর কম দাম হওয়ার কারণে ক্রেতাদের মনেও সন্তষ্টি থাকে।’ সিঙ্গারা ক্রেতাদেরকে সিঙ্গারার মান এবং স্বাদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সবাই অসিতের সিঙ্গারার ভ‚য়শী প্রশংসা করেন। অসিত সাহা জানান, একসময় তিনি একটি সিঙ্গারা মাত্র চার আনায়ও বিক্রি করেছেন। এখন বিক্রি করছেন মাত্র এক টাকায়। এক টাকায় মানুষকে তৃপ্ত করছেন এটিই তাঁর বড় এক পাওয়া। গাংনালিয়া বাজার দিয়ে শ্রীপুর বা কোথাও গেলে অবশ্যই অসিতের ‘এক টাকার সিঙ্গারা’ খেতে ভুল করবেন না।