মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : রিমান্ডে নির্যাতনের অভিযোগ এনে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমারসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন স্ত্রী মিতু হত্যাকাণ্ডের দায়ে আটক সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতার।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে মামলার আবেদন জমা দেন বাবুল আকতারের আইনজীবী। আদালত আবেদনটি গ্রহণ করে আদেশের জন্য অপেক্ষামান রেখেছেন। বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী জানান, বাবুল আক্তার একটি মামলার আবেদন করেছেন। বনজ কুমার ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন, পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার এসপি নাজমুল হাসান, মেট্রো এসপি নাঈমা সুলতানা, খুলশী থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা, সিএমপির ডিবি বন্দর জোনের সহকারী কমিশনার একেএম মহিউদ্দিন সেলিম ও পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার ইন্সপেক্টর কাজী এনায়েত কবির।
মামলায় নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর ১৫ (১) ধারা এবং সংশ্লিষ্ট আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০২১ সালের ১১ মে বাবুল আকতারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। এরপর থেকে বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন।
তার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ১০ মে থেকে ১৭ মে পর্যন্ত সময়ে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ও জেলা অফিসে বাবুল আকতারের উপর নির্যাতন করা হয়। স্ত্রী হত্যার ঘটনায় মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য বাবুল আকতারের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করা হয় বলেও অভিযোগ করেন আইনজীবীরা।
বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন বলেন, সাবেক এসপি বাবুল আকতারকে পিবিআই অফিসে নির্যাতনের অভিযোগে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন। আদালত মামলার বিষয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর আদেশ দেবেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার কাছে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তৎকালীন এসপি বাবুল আকতার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ওই বছরের আগস্টে বাবুল আকতারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এদিকে বাবুলের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে তার শ্বশুরের দায়েরকৃত মামলার অভিযোগপত্রে বাবুল আকতারকেই প্রধান আসামি করে পিবিআই চার্জশীট প্রদানের কাজ সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে।
মায়ের মৃত্যু এবং ওই অভিযোগে বাবা বাবুল আকতার কারাগারে থাকায় তাদের দুটি সন্তান এখন মাগুরা শহরের কাউন্সিল পাড়ায় দাদার বাড়িতে বসবাস করছে।