মাগুরা প্রতিদিন: স্ত্রীসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় বরখাস্ত পুলিশ কর্মকর্তা মাগুরার আসবা গ্রামের সৌমেন রায়কে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমীন। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী।
এদিকে আসামি আদালত থেকে জামিন নিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন মামলার বাদী।
দণ্ডপ্রাপ্ত সৌমেন রায় (৩৪) মাগুরা সদর উপজেলার কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের আসবা গ্রামের সুনীল রায়ের ছেলে।
হত্যাকাণ্ডের সময় খুলনার ফুলতলা থানায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পদে কর্মরত ছিলেন।
জানা গেছে, কুমারখালী থানায় কর্মরত থাকার সময় এএসআই সৌমেনের সঙ্গে একটি মামলাকে কেন্দ্র করে পরিচয় হয় আসমার। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেসময় সৌমেন তার নাম মো. সুমন হোসেন রাখেন এবং সুমন নামেই মুসলিম বিধানমতে আসমাকে বিয়ে করেন। আসমার তৃতীয় স্বামী ছিলেন সৌমেন। বিয়ের পর থেকেই কুষ্টিয়ার আড়ুয়াপাড়ায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন তারা। এএসআই সৌমেন খুলনার ফুলতলা থানায় বদলি হয়ে গেলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। আসমা বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছেন এমন সন্দেহ ও ক্ষোভ থেকে স্ত্রী আসমা খাতুন (২৫), তার দ্বিতীয় স্বামীর ছেলে রবিন (৫) এবং বিকাশকর্মী শাকিলকে (২৮) গুলি করে হত্যা করেন সৌমেন রায়। ২০২১ সালের ১৩ জুন বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে কুষ্টিয়া শহরের কাস্টমস মোড় এলাকার নাজ ম্যানশন মার্কেটের বিকাশের দোকানের সামনে ঘটে হত্যাকাণ্ড। পরে পুলিশ তাকে ঘটনাস্থল থেকে সার্ভিস রিভলভার, গুলি ও ম্যাগাজিনসহ আটক করে। একই দিন তাকে বরখাস্ত করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন নিহত আসমার মা। ১৪ জুন আদালতে স্বীকারোক্তি দেন আসামি সৌমেন। পরে তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা নিশিকান্ত সরকার। ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর হাইকোর্ট থেকে জামিন নেয় আসামি সৌমেন। এরপর কুষ্টিয়া আদালতে বারবার আত্মসমর্পণ করতে বললেও উপস্থিত হয়নি। এ কারণে ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তবে এখনো তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।