মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : জার্মান ফুটবল ভক্ত মাগুরার কৃষক আমজাদ হোসেন এবার বানিয়েছেন সাড়ে ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ পতাকা। নিজের আবাদি ৩০ শতাংশ জমি বিক্রির অর্থে বানানো দীর্ঘ পতাকাটি তিনি শুক্রবার দুপুরে গ্রামের স্কুল মাঠে প্রদর্শন করেন।
২০১৪ সালে জার্মানের সাড়ে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ পতাকা বানিয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করেন মাগুরার সদর উপজেলার ঘোড়ামারা গ্রামের আমজাদ হোসেন (৭০)। সে সময় জার্মান দূতাবাসের কর্মকর্তারা মাগুরায় গিয়ে তাকে সংবর্ধনাও দেন। দেন জার্মানের অফিশিয়াল ফুটবল ক্লাবের সদস্য পদের স্বীকৃতিও।
জানা যায়, ২০০৬ সালে শারীরিক অসুস্থ্যতায় জার্মানী ঔষধ সেবনে সুস্থ্য হয়ে ওঠেন কৃষক আমজাদ হোসেন। সেই থেকে জার্মান ফুটবলের ভক্ত হয়ে ওঠেন। আর বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন হলেই প্রিয় ফুটবল দলের জন্যে তিনি তৈরি করেন দীর্ঘ পতাকা।
২০১৮ সালের বিশ্বকাপের সময় তৈরি করেন সাড়ে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পতাকা। এবার ওই পাতাকার সঙ্গে যোগ হয়েছে আরো ২ কিলোমিটার। দীর্ঘ সাড়ে ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘের এই পতাকা শুক্রবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদর্শন করেন তিনি। গ্রামের পাশে নিশ্চিন্তপুর স্কুল মাঠে পতাকা প্রদর্শনী উপলক্ষ্যে গ্রামের ছেলে বুড়ো অনেকেই হাজির হন। শ্বশুরবাড়ি থেকে এসেছে মেয়েরা। সুদুর চট্টগ্রাম, যশোরসহ বিভিন্ন অঞ্চলের জার্মান ফুটবল ভক্তরাও উপস্থিত হয় এই প্রদর্শনীতে।
আমজাদ হোসেন জানান, ২০০৬ সালে যখন প্রথম দেড় কিলোমিটার পতাকা বানানো হয়। গ্রামের হাজারো মানুষ তারা জার্মান ফুটবলের ভক্ত না হলেও তাদের সহায়তায় সারা শহর পতাকা প্রদর্শন করা হয়েছে। পরে পতাকা আরো বড় হওয়ায় সেটি শহরে নিলে জানজট তৈরি হয়। তাই স্কুল মাঠেই প্রদর্শন করা হয়।
তিনি বলেন, ১৪ সালে জার্মান দল চ্যাম্পিয়ন হলে ঢাকাস্থ জার্মান দূতাবাসের কর্মকর্তারা আমার বাড়িতে এসেছে। স্টেডিয়ামে আমাকে অফিশিয়াল ফুটবল দলের সদস্য পদ দিয়েছে। এটি আমার জন্যে অনেক বড় সম্মানের।
জার্মান ফুটবলের প্রতি ভালোবাসায় দীর্ঘ পতাকা বানাতে তিনি পারিবারিক আবাদি জমি বিক্রি করেছেন। প্রথম দিকে পরিবারের সদস্যরা উৎসাহ না দিলেও এখন কারো কোনো আপত্তি নেই। বিধায় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি প্রিয় ফুটবল দলের জন্যে এমন কৃর্তি রেখে যেতে চান বলে আমজাদ হোসেন জানান।
পতাকা প্রদর্শনীতে উপস্থিত মাগুরার ক্রিড়া সংগঠক বারিক আনজাম বার্কি বলেন, মাগুরার আমজাদের মতো সারাদেশেই ফুটবল ভক্তদের উন্মাদনা রয়েছে। এটি আমাদের বড় সম্পদ। এটিকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করা গেলে বাংলাদেশের ফুটবল ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে পারে। সেইদিকে সকলের নজর দিতে হবে।