আজ, শনিবার | ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | রাত ২:৪৬

ব্রেকিং নিউজ :
ক্রীড়ালেখক হিসেবে সম্মাননা পেলেন মাগুরার জাহিদ রহমান মাগুরা জেলা বিএনপির নতুন কমিটিকে ছাত্রদলের অভিনন্দন মাগুরা জেলা বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা মাগুরার রওশন ট্রাস্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার পদে নিয়োগ দিচ্ছে মাগুরায় বিএনপি সহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে মুক্ত দিবস পালন মাগুরার দারিয়াপুর কলেজ পরিচালনা কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির দু’ গ্রুপে ব্যাপক সংঘর্ষ গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানের অব্যাহতিতে মহম্মদপুরে আনন্দ মিছিল মাগুরার আঠারোখাদা গ্রামে ছেলের ছুরির আঘাতে বৃদ্ধ বাবা খুন মাগুরায় বাংলাদেশের আলো পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা বার্ষিকী উদযাপন মাগুরা জেলা যুবদল সভাপতি সম্পাদককে বহিস্কারের দাবি

মাগুরায় আদালতের নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখে ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার ফন্দি!

মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : মাগুরা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখে পরিকল্পিকভাবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এবং গণপূর্ত বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা আঁটছে। সরকারের বিশাল অংকের এই টাকা গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

মাগুরা জেলা গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৪ মে মাগুরায় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণের দায়িত্ব পান ফরিদপুরের ঠিকাদার আবদুস সালাম জেভি। ৮ তলা বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণের চুক্তিমূল্য ছিল ২২ কোটি ৭৮ লক্ষ ১৮ হাজার ৮৮১ টাকা। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৭ সালের ১৩ নভেম্বরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০ কোটি ৬২ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা তুলে নিয়ে কাজ বন্ধ রেখেছে।

সরজমিনে তথ্যানুসন্ধান এবং গণপূর্ত বিভাগের বিভিন্ন সূত্রের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সকল ফ্লোরের টাইলস (গ্রাউণ্ড ফ্লোর বাদে) থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থাপনের কাজ পর্যন্ত সম্পন্ন করেছে। বাকি রয়েছে ভবনের লিফট, রং করণ, বাউণ্ডারি ওয়াল ও গেট, সিসিটিভ সংযোগ এবং ফায়ার ফাইটিং সিস্টেমের কাজ। অথচ এই কাজটুকু বন্ধ রেখে নতুন করে আরও ১০ কোটি টাকা আদায়ের চেষ্টা চলছে।

ভবনটির স্থানীয় নির্মাণ তদারকি কমিটির সদস্য জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ আরো অনেকের অভিযোগ, ৩ বছর আগে অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন হলেও পরিকল্পিতভাবে ভবনটি হস্তান্তরের চেষ্টা করা হয়নি। এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগ এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা প্রশাসনিক জটিলতার দোহায় দিয়ে এড়িয়ে গেছে।

মাগুরা জেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জেলা জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী শফিকুজ্জামান বাচ্চু বলেন, সরকারের অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডই এসব দূর্ণীতি পরায়ন ঠিকাদার এবং সরকারি কর্মকর্তাদের জন্যে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আমরা এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। সরকারি অর্থ তসরুপ করার লক্ষ্যে তারা নানা ফন্দি তৈরি করছে।

মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. শফিকুল আজম বাবলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নির্মাণ তদারকি কমিটির সদস্য এড. সাজিদুর রহমান সংগ্রাম, সিনিয়র এড. হাসান সিরাজ সুজা, এড. রোকনুজ্জামান সহ আরো অনেকেই বিষয়টির তদন্তে উর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।
তাদের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি গণপূর্ত বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী এবং উর্ধ্বতন কতিপয় কর্মকর্তা যোগসাজসে ৫ বছর আগের টেণ্ডার সংশোধনের মাধ্যমে সামান্য কিছু কাজ সম্পন্ন করতে আরও ১০ কোটি টাকা ছাড় করানোর চেষ্টা করছে। যে টাকার সিংহভাগই যাবে তাদের পকেটে।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক আবদুস সালামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অল্প কিছু কাজ পড়ে আছে। কিন্তু প্রশাসনিক কিছু ব্যাপার স্যাপার রয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়। সেটি ঠিকঠাক না হওয়ায় কাজ শেষ করা যায়নি।

অথচ মাগুরা জেলা গৃহায়ন ও গর্ণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হায়াত মোহাম্মদ শফিউল আজম জানালেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, টেণ্ডার অনুযায়ীই ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিছু কাজ বাকি আছে যেগুলো পূর্বের টেণ্ডারে উল্লেখ ছিল না। বিধায় অবশিষ্ট কাজের জন্যে ১০ কোটি ৮ লক্ষ টাকার নতুন প্রাক্কলিত মূল্য নির্ধারণ করে টেণ্ডার আহ্বানের জন্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্যে পাঠানো হয়েছে।

অনুমোদন পাওয়া গেলে আগামি ৬ মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করে ভবন হস্তান্তর করা সম্ভব হবে বলেও তিনি জানান।

শেয়ার করুন...




©All rights reserved Magura Protidin. 2018-2022
IT & Technical Support : BS Technology