মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একটি হত্যাকাণ্ডের জেরে প্রায় দুই মাস ধরে বাড়ি ছাড়া মাগুরা সদর উপজেলার সিংহডাঙ্গা গ্রামের শতাধিক পরিবার। প্রতিপক্ষের ভয়ে বাড়ি ফিরতে না পারায় তারা এখন অনেকটাই ফেরারি জীবন যাপন করছে।
সরেজমিন এলাকায় গিয়ে দেখাগেছে প্রায় শতাধিক বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে। অনেকের ইটের পাকা বাড়িও মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে প্রতিপক্ষের ভয়ে ক্ষতিগ্রস্থ এসব পরিবার এলাকায় ফিরে এসে বাড়িঘর নির্মাণসহ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছে না। আবার শুধু প্রতিপক্ষই নয়, এলাকার অনেক নিরিহ মানুষের ঘরবাড়ি ভাংচুর, গাছপালা লুটপাটের শিকার হওয়ায় তাদের অবস্থাও যাযাবর।
আলেক বিশ্বাস, কুদ্দুস খন্দকার, বাচ্চু মোল্যা, বিল্লাখ শেখ, ছালেক বিশ্বাসসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, গ্রাম্য দলাদলির জের হিসেবে কবির হোসেন নিহত হয়। কিন্তু প্রতিপক্ষের উপর প্রতিশোধ নিতে গিয়ে এভাবে বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট হওয়ায় তারা এখন অসহায় জীবন যাপন করছেন। এদের অধিকাংশই আত্মিয় স্বজনের বাড়ি আবার কেউ শহরে বাসা ভাড়া করে জীবন যাপন করছে।
বিশেষ করে বেশি বিপাকে পড়েছে কৃষক ও দিন মজুররা। ঠিকমত কাজ করতে না পারায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক দলের নেতাদের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা এর কোন সমাধান দিতে পারেনি। ফলে তারা প্রাণ ভয়ে নিজেদেরে বাড়িঘরে ফিরতে পারছেন না।
ক্ষতিগ্রস্থ বিজিবি সদস্য ইলিয়াস হোসেন, ঘটনার সময় আমি কর্মস্থলে ছিলাম। এলাকায় হত্যাকাণ্ডের পর উত্তেজিত জনতা আমার বাড়িটিও ভাংচুর করেছে। আমার পরিবার নিয়ে এলাকায় গিয়ে বাড়িঘর মেরামত করে বসবাস করবো সে পরিবেশও পাচ্ছিনা।
প্রতিপক্ষের হাতে নিহত কবির হোসেনের স্ত্রী রুবিয়া বেগম জানিয়েছেন, আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের আইনের মাধ্যমে সঠিক বিচার চাই।
উল্লেখ্য, মাগুরা সদর উপজেলার সিংহডাঙ্গা গ্রামে গত ১৪ আগষ্ট বুধবার বিকালে সামাজিক প্রতিক্ষের সমর্থকদের হামলায় কবির হোসেন (৫৫) নামে স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ কর্মী খুন হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয় আরো ১০ জন। নিহত কবির হোসেন পেশায় একজন কৃষক।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর এলাকায় ভাংচুর ও লুটপাটের খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক উপস্থিত হয়ে প্রতিহত করে। সেখানে পুলিশের একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। তবে কেউ প্রাণভয়ে বাইরে অবস্থান করলে তাদের গ্রামে ফিরলে পুলিশের পক্ষ থেকে সবরকম সহযোগিতা দেয়া হবে।