মাগুরা প্রতিদিন : মাগুরার আলমখালি বাজার থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর ২ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৬ এর একটি দল মাগুরা সদর উপজেলার আলমখালী বাজার এলাকায় জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের গোপন বৈঠক চলাকালে অভিযান চালায়। এ সময় “আনসার আল ইসলাম” এর দুই সদস্য পাবনার সদর উপজেলার রাঘবপুর গ্রামের মনিরুল হায়দার মৃদুলের ছেলে ঈষান হায়দার (২৮) এবং বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলার মানরাতুল গ্রামের আবদুল কুদ্দুস বারীর ছেলে আবদুল করিমকে গ্রেফতার হলেও অন্যান্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর সদস্য বলে নিজেদেরকে স্বীকার করেছে। তারা আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। বিভিন্ন সময়ে তারা অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্য দেখে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে এ সংগঠনে যোগদান করে। পরবর্তীতে নিজেরাই সংগঠনের সদস্য সংগ্রহে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। পাশাপাশি তারা মসজিদ, বাসা বা বিভিন্ন স্থানে সদস্যদের নিয়ে গোপন সভা পরিচালনা করে বিভিন্ন তথ্যের অপব্যাখা ও মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে দেশের বিচার ও শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিতৃষ্ণা তৈরি করে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করার জন্য সদস্যদেরকে উগ্রবাদী করে তুলতো বলে র্যাবের মিডিয়া সেল সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রটি আরো জানায়, গ্রেফতারকৃত ঈষান হায়দার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রোডাকশন অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিল। ইতোপূর্বে আটক ইয়াকুব হুজুরের মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করে দাওয়াতী কার্যক্রম করতে থাকে। মূলত সে পাবনা জেলার দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে কাজ করে আসছিলো। পাশাপাশি সে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশের সমমনা ব্যক্তিদের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে সংগঠনের সদস্যদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণে পার্শ্ববর্তী দেশে প্রেরণের কাজে নিয়োজিত ছিল।
অন্যদিকে আবদুল করিম পেশায় মুদি দোকানদার ছিল। সে ঈষান হায়দার এবং আব্দুল্লাহর মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করে দাওয়াতী কার্যক্রম চালায়। সে নিজ এলাকা বরিশালে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি সংগঠনের নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদান করতো বলে জানা যায়্। টার্গেট কিলিং এর ব্যপারে সে অত্যন্ত উৎসাহী ছিল। পাশাপাশি সংগঠনে নিয়মিত চাঁদা প্রদান এবং সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের নিকট হতে চাঁদা সংগ্রহ করতো বলে বলে র্যাব জানায়।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন “কেএনএ” এর সাথে একত্রিত হয়ে পাহাড়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত জঙ্গি সংগঠন “জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া” এর আমীর ও শীর্ষস্থানীয় নেতাসহ প্রায় শতাধিক জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠনের প্রায় ০৩ হাজার এবং হলি আর্টিজান হামলার পরবর্তী সময়ে প্রায় ০২ হাজার জঙ্গীকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে র্যাব। যখনই জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়েছে তখনই র্যাব ফোর্সেস সাঁড়াশি অভিযানের মাধ্যমে জঙ্গিদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে বলে র্যাব সূত্রে দাবি করা হয়েছে।