আজ, রবিবার | ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | রাত ২:০২

ব্রেকিং নিউজ :
বৃষ্টির প্রার্থনায় নামাজ পড়ে কাঁদলেন শ্রীপুরের মুসল্লিরা মহম্মদপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় শিক্ষকের মৃত্যু মাগুরায় প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ মাগুরায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন জাহিদুর রেজা চন্দন ও নবীব আলী মহম্মদপুরে চেয়ারম্যান পদে ৯ জন শালিখায় ৫ জনের মনোনয়ন পত্র জমা স্মৃতির আয়নায় প্রিয় শিক্ষক কাজী ফয়জুর রহমান স্মৃতির আয়নায় প্রিয় শিক্ষক কাজী ফয়জুর রহমান মাগুরা সদরে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৭ শ্রীপুরে ৪ প্রার্থীর মনোনয়ন জমা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিক কাজী ফয়জুর রহমানের ইন্তেকাল মাগুরার শ্রীপুরে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা!

মাগুরায় বিদ্রোহী ও বিএনপি জাসদ সমর্থিত প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জের মুখে আ’লীগ

মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : মাগুরায় সদর উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সবকটি ইউনিয়নেই চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী, বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র ও জাসদ প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীরা।

১১ নভেম্বর এ উপজেলায় অনুষ্ঠিত হবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। ২৬ অক্টোবর মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষদিনে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে বগিয়া, হাজরাপুর ও হাজিপুর ইউনিয়নের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নিজেদের মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ায় আওয়ামী লীগ মনোনিত তিন প্রার্থী যথাক্রমে মীর রওনক হোসেন, মোজাহেরুল হক আখরোট এবং কবির হোসেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তবে বাকি ১০টি ইউনিয়নে নৌকা মার্কার প্রার্থীরা কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে পড়েছেন।

প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ওই ইউনিয়নগুলোর মধ্যে কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নে গতবারের পরাজিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী আলমগির হোসেন তুষারকে আবারও দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন গতবারের বিজয়ী মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের ইতিহাসে অত্যন্ত জনপ্রিয় সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন। এবারও জাহাঙ্গীর হোসেন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে জনসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। এ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো: টিপু সুলতান।

নিরপেক্ষ ভোট হলে বেরইল পলিতা ইউনিয়নে জমজমাট ও হাড্ডা-হাড্ডি নির্বাচন হবে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় ভোটাররা। এ ইউনিয়নে গতবারের বিজয়ী আওয়ামীলীগ প্রার্থী মহব্বত আলি এবারও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক রাজা। পাশাপাশি বিএনপি নেতা শেখ শফিকুল ইসলামও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই তিন প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এ ইউনিয়নের নির্বাচন জমজমাট হয়ে উঠতে পারে বলে ভোটারদের অভিমত।

মাগুরা পৌরসভার সীমানা সংলগ্ন বিএনপিপ্রধান অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত ইউনিয়ন চাউলিয়া। গতবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান মোল্যাকে হারিয়ে চেয়ারম্যান হতে চান এ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা রেজাউল ইসলাম মাস্টার। স্থানীয় ভোটারদের সমর্থন আদায়ে ইতোমধ্যেই তিনি জনসংযোগ শুরু করেছেন।

নির্বাচনে রাঘবদাইড় ইউনিয়নে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছেন মাগুরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আশরাফুল আলম বাবুল ফকির। তিনি গতবারের নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ভোটের ব্যাবধানে বিজয়ী হলেও এবার তার শক্ত প্রতিপক্ষ এ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রাক্তন আওয়ামী লীগ কর্মী আবু তালেব নান্টু। স্থানীয় প্রশাসনের যথাযথ ভূমিকায় রাঘবদাইড়সহ সকল ইউনিয়নে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে উৎসব আমেজ দেখা দিতে পারে বলে ভোটারদের অভিমত।

আঠারখাদা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন গতবারের বিজয়ী চেয়ারম্যান সঞ্জিবন বিশ্বাস। তবে এ ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন ইউনিয়নের সাবেক দুই চেয়ারম্যান বেনজির হোসেন এবং অমরেশ চন্দ্র বিশ্বাস। পাশাপাশি সাধারণ ভোটারদের সমর্থন আদায়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জাসদের প্রার্থী বিমল বিশ্বাস। এ অবস্থায় কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন নৌকা মার্কার প্রার্থী সঞ্জিবন।

প্রার্থীর সমর্থন দেয়া নেয়া নিয়ে ৪ খুনের ঘটনায় জগদল মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের জন্যে একটি স্পর্ষকাতর নির্বাচনী ইউনিয়ন হয়ে দেখা দিয়েছে। এবারও সেখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন গতবারের বিজয়ী চেয়ারম্যান সৈয়দ রফিকুল ইসলাম। তবে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম এবং জাহিদ হাসান।

শত্রুজিতপুর ইউনয়নে একাধিকবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান এডভোকেট সঞ্জিত কুমার বিশ্বাস এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে সেখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত দুই স্বতন্ত্র প্রার্থি রফিকুল ইসলাম এবং এড. হাফিজুর রহমান বাবলু।

২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদর উপজেলার একমাত্র গোপালগ্রাম ইউনিয়নে বিএনপি ঘরানার প্রার্থী রাজিব হোসেন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি জেলা উপজেলার আওয়ামী রাজনীতি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। তবে এবারও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। অন্যদিকে গতবারের পরাজিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম মিলন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। এ ইউনিয়নে বিএনপির সজিব বিশ্বাস স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইতোমধ্যেই তিনি শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে ভোটারদের মধ্যে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছেন। এছাড়া এ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিনের ছেলে আল ইমরানও জাসদের প্রার্থী হিসেবে যথেষ্ট শক্তিমত্তার পরিচয় দেবেন।

সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের বাকি দুটি ইউনিয়ন মঘি এবং কছুন্দি। সেখানেও নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছেন গতবারের নির্বাচিত আওয়ামী লীগের দুই চেয়ারম্যান হাসনা হেনা এবং মোঃ কাশেম মোল্যা। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নির্বাচন করছেন যথাক্রমে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান রনজু এবং মাগুরা জেলা যুবলীগ সদস্য বাকি বিল্লাহ সান্টু।

এ অবস্থায় দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত বলে দলীয় নেতা কর্মীদের অনেকে মতামত দিলেও প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করেছেন। লক্ষ্য পূরণে তারা নির্বাচন কমিশন এবং জেলা পুলিশ প্রশাসনের যথাযথ ভূমিকার দাবি জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন...




©All rights reserved Magura Protidin. 2018-2022
IT & Technical Support : BS Technology