মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার কোদলা গ্রামের এক গৃহবধূকে গণ ধর্ষণের দুই সপ্তাহ পর অবশেষে মামলা নিয়েছে পুলিশ। শনিবার সকালে শ্রীপুর থানায় ঋজু হওয়া মামলার বাদি ভুক্তভোগী গৃহবধূ (৩২) নিজেই।
এদিকে, মামলা ঋজু হওয়ার রাতেই অভিযুক্ত তিন আসামীর দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক দুইজন হলেন উপজেলার কোদলা গ্রামের মঞ্জু শেখের ছেলে মাজেদুল শেখ (৩৫) ও মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোঃ দিপুল (২২)।
এখনো পলাতক রয়েছেন মামলায় অপর অভিযুক্ত একই গ্রামের জুনাব আলীর ছেলে মোঃ আশারাফুল (২৫)। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম।
গত ২৮ জুন রাতে শ্রীপুর উপজেলার কোদলা গ্রামে দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধূ গণ ধর্ষণের শিকার হয়। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ জানান, ঘটনার রাতে তার স্বামী পেশাগত কাজে রাজবাড়ি জেলাতে ছিলেন। রাতের বেলা তিনি দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া শিশু সন্তানকে নিয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমন সময় একই গ্রামের দিপুল নামে পরিচিত এক যুবক দরজায় কড়া নাড়লে তিনি দরজা খুলে দেন। কিন্তু দিপুল একই গ্রামের মাজেদুল ও আশরাফুল নামে আরো দুই যুবককে নিয়ে ঘরে ঢুকে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। শুধু তাই নয়, কোন এক ব্যক্তির সাথে তার অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন অভিযোগ তুলে ধর্ষণকারী ওই তিন যুবক লকার তার কানের দুল, লকার ভেঙ্গে ব্যাংকের দুটি ব্লাঙ্ক চেকে অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে করিয়ে নিয়ে যায়।
রাতের ওই ঘটনার পর সকালে ওই গৃহবধূ এ বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে শ্রীপুর থানায় গেলে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভূক্ত বসিয়ে রাখেন। এমনকি ডাক্তারি পরীক্ষার জন্যে অনুরোধ জানালেও তিনি সেই ব্যবস্থা না করে ভয় দেখিয়ে বের করে দেন।
এ ঘটনাটি নিয়ে শুক্রবার দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি বাংলাদেশ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তাদের তদারকিতে মাগুরা পুলিশের চারজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টির তদন্ত শুরু করেন।
এদিকে পুলিশ শুক্রবার সারারাত অভিযান চালিয়ে গণ ধর্ষণে জড়িত দুইজনকে আটক করলেও অভিযুক্ত থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় স্থানীয় নারী ও মানবাধিকার সংঘটন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তবে মাগুরা পুলিশ সুপার খান মহাম্মদ রেজোয়ান বলেন, বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তি ব্যবস্থা নেয়া হবে।