মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : নির্যাতিত গৃহ পরিচারিকা শিশু আকলিমার প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়ালেন সৌদি প্রবাসী। স্থানীয় সাংবাদিক কাশেমুর রহমান শ্রাবণের মাধ্যমে তিনি শিশুটির চিকিৎসার জন্য এককালীন অর্থ প্রদান করেন। এছাড়া শিশুটির ভবিষ্যতের জন্য প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন ওই সৌদি প্রবাসী।
নির্যাতনের শিকার শিশু আকলিমা (১১) মাগুরার সদর উপজেলার বাহারবাগ গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে আকলিমার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার মা তাকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। এরপর কুবাদও একদিন শিশুটিকে ফেলে অন্যত্র চলে যায়। এ অবস্থায় শিশু আকলিমার দায়িত্ব পড়ে তার দাদা-দাদির উপর।
পরিবার সংশ্লিষ্টরা জানায়, দাদা-দাদী প্রথমে শিশুটিকে স্থানীয় মাদ্রাসায় ও পরে একটি স্কুলে ভর্তি করে দেন। এক পর্যায়ে প্রতিবেশী মাসুদুর রহমান বাবু তার শিশু সন্তানকে দেখাশোনার জন্য আকলিমাকে ঢাকাতে নিজ বাসায় নিয়ে যান। সেখানে দীর্ঘ ১৮ মাস থাকলেও আকলিমার উপর অমানবিক নির্যাতন চালান বাবুর স্ত্রী লিপি বেগম।
সম্প্রতি দাদা-দাদির অনুরোধের প্রেক্ষিতে আকলিমাকে মাগুরাতে নিয়ে আসা হলে তার কঙ্কলসার শরীর দেখতে পাওয়া যায়। এ সময় আকলিমার উপর চালানো লিপি খাতুনের নানা নির্যাতন খবর জানা যায়। বাবু বিশ্বাসের শিশু সন্তানের মুখের বমি, কখনও প্রস্রাব পর্যন্ত তাকে খেতে বাধ্য করা হতো বলে আকলিমা জানায়।
এ অবস্থায় শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে ২২ ডিসেম্বর মাগুরা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ ২৩ ডিসেম্বর শিশু নির্যাতনকারী লিপি বেগমকে আটক করে।
এদিকে দেশের বিভিন্ন গণ মাধ্যমে শিশু আকলিমার নির্যাতনের সংবাদ প্রকাশের পর তার প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ওই সৌদি প্রবাসী।
বৃহস্পতিবার বিকালে ওই প্রবাসির পক্ষে শিশু আকলিমার হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন দীপ্ত টিভি’র মাগুরা প্রতিনিধি কাসেমুর রহমান শ্রাবণ। এর আগে বাংলাভিশন টেলিভিশনের মাগুরা জেলা প্রতিনিধি রবিন শরিফ শিশুটির সাথে যোগাযোগ করার জন্য একটি মোবাইল ফোন কিনে দেন।
দীর্ঘ ১২দিন মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বর্তমানে আকলিমা বাহারবাগ গ্রামে তার দাদা-দাদির সঙ্গে বসবাস করছে।