সুলতানা কাকলী : মাছে ভাতে বাঙালি। কথাটা সচরাচর প্রচলিত। কিন্ত যখন কোনো অনুষ্ঠান উপলক্ষে খাওয়া-দাওয়া হয় সেটা হয় আনুষ্ঠানিক খানা।
আগে যখন বাসায় কোনো মেহমান আসতো তখন মেহমানদারি করা হতো বাসাতেই। সেমাই, বিভিন্ন রকমের পিঠা, পায়েস, ডালের বড়া, সিঙ্গাড়া, আরো কতো রকমের খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হতো। নিজের হাতে বানানো নাস্তা আত্মীয়স্বজন এবং অন্যান্য মেহমানকে খাওয়ানোর মাঝে ছিল অপার আনন্দ। কিন্তু এখন সেই বিড়ম্বনা যেনো নেই। যুগের পরিবর্তনে খোদ মাগুরাতেও বদলে গেছে অনেককিছু।
মাগুরাতে ঐতিহ্যবাহী সুগন্ধা, চলন্তিকার সাথে নতুন নতুন হরেকরকম মিষ্টির দোকান ও রেষ্টুরেন্টের ছড়াছড়ি এখন। হাত বাড়ালেই নানান ধরনের খাবার পাওয়া যায়।বিরানি, চটপটি, মোগলাই সবই আজ হাতের নাগালে। সিয়াম কাবাব, নান্না বিরিয়ানি আর কত কী!
মাগুরাবাসী ভোজন রসিক! হালে তার দৃষ্টান্ত মেলে সন্ধ্যার পর শহরের বিভিন্ন মোড়ে চটপটি, ফুচকা, কাবাব, গ্রিল এর অস্থায়ী দোকানগুলোতে ঠাসা ভীড় দেখে। মাগুরাবাসী এখন আর ঘরের কোণে বসে ডালের বড়া আর সেমাই এর মাঝে বন্দি নেই। কিশোর- কিশোরী যুবা-বৃদ্ধা সবার ভিড় জমে বেবি প্লাজা, নূরজাহান প্লাজার সামনে। সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের গেটেও খাবারের জন্য ভীড় জমে। সন্ধ্যা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত চলে ভোজন রসিকদের আড্ডাবাজি।
আরো আছে! কলেজ রোডে আমাদের শ্রদ্ধেয় রত্ন ভায়ের চা এবং কফি! বহু বছর ধরে ক্রমেই বেড়ে চলেছে এই দোকানের কদর। এখানেও ছোট বড় কোনো ভেদাভেদ নেই। মাগুরাতে আমাদের আছে একটা দল মাগুরা মাস্তি। শিউলি, মুক্তি, বিউটি, বিথীসহ আমরা কয়েকজন এ দলের সদস্য।
আমরা প্রায়ই রত্ন ভায়ের দোকানে গিয়ে চা/কফি পান করি। এছাড়াও পুর্বাশা সিনেমা হলের সামনে আছে হাসানের সর-চা, লেবু চা। এই দোকানের দুধ চা অতুলনীয়। অনেকেই এখানে চা খেতে আসে। চা পানে যে অপার আনন্দ তা হাসানের হাতের চা খেলে বুঝা যায়।
আসলে দিন যতই যাচ্ছে ততই আমাদের খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আসছে। হয়ত আর কদিন পর ঢাকার মতো মাগুরাতেও অনলাইনে খাবার কিনতে পাওয়া যাবে।