নিজস্ব প্রতিবেদক : মাগুরার শ্রীপুরে রবিবার কয়েকশত ভ্যান চালক `ভ্যান চালানোর অনুমতি দিন নতুবা খাবার দিন`-এই আর্জি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে।
সকালে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে নিজস্ব ভ্যান নিয়ে শ্রীপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম মাঠে এবং শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের সামনে এসে জড়ো হন। এরপর ভ্যান চালকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিউজা উল জান্নাহ-এর কাছে এই দাবি তুলেন যে, ভ্যান চালাতে না পারার কারণে অর্ধহারে অনাহারে দিক কাটাতে হচ্ছে। দ্রুত তাদের ভ্যান চালানোর অনুমতি দেওয়া হোক নতুবা তাদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করা হোক।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিউজা উল জান্নাহ ভ্যান চালকদের এই বক্তব্য শোনার পর এই মুহূর্তে কোনো ধরনের খাদ্য সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে অপরাগতা প্রকাশ করেন। তবে সরকারি সহায়তা এলেই তিনি সবাইকে খাদ্য পৌঁছে দেবেন বলে জানান। একই সাথে তিনি প্যাডেল চালিত ভ্যান চালানোয় কোনো নিষেধাজ্ঞ নেই বলে ঘোষণা দেন। তবে ভ্যানে কম যাত্রী নিতে অনুরোধ করেন।
এদিকে লকডাউনের কারণে কৃষিকাজের বাইরে যারা বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চালিয়ে ‘দিনে আনি দিয়ে খাই’ জীবনযাপন করেন তাদের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ এসব বেশিরভাগ পরিবারে মজুদ খাদ্যদ্রব্য থাকে না। সারাদিন রোজগারের পর এরা চাল ডাল তেল কিনে থাকেন। এদিকে আরও বিপাকে পড়েছেন ইন্জিন চালিত ভ্যান চালকরা। সরকার থেকে এই যান বন্ধ ঘোষণা আসার পর কেউ আর এখন এই যান নিয়ে বের হতে পারছেন না। এমনকি লকডাউন উঠে গেলেও তাদের রাস্তায় নামতে দেওয়া হবে না বলে এরকম প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত রয়েছে।
মুজদিয়ার গ্রামের গরিব ভ্যান চালক আবু বক্কারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, লকডাউন ঘোষিত হওয়ার পর তিনি সম্পূর্ণ বেকার। কোনো আয় রোজগার নেই। আগে ইঞ্জিন চালিত ভ্যান চালিয়ে দিনে গড়ে চার থেকে পাঁচশত টাকা আয় করতেন। কিন্তু বর্তমানে তাঁর অবস্থা খুবই করুন।
বক্কারের মতো শত শত ভ্যানচালকের অবস্থা এখন একই রকম।
জানা গেছে শ্রীপুরের আটটি ইউনিয়নে অন্তত কয়েক হাজার ভ্যান ও ইঞ্জিন চালিত ভ্যান চালক রয়েছেন। যাদের জীবিকা পুরোটাই এই যানের উপর নির্ভরশীল। এদিকে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে সরকারি এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে এখনও কেউ কোনো ধরনের খাদ্যসামগ্রি সহায়তা প্রদান করেনি।
এদিকে রবিবার সকাল থেকে ত্রাণের দাবিতে মাগুরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনেও শতশত নারী পুরষ ভিড় করলে সন্ধ্যায় খালিহাতে তারা ফিরে গেছেন বলে জানা গেছে।