মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : মাগুরার মহম্মদপুর সরকারি আরকেএইচএস ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষকের দূর্ণীতির খেসারত দিচ্ছে হচ্ছে ৩৯ শিক্ষার্থিকে। শনিবার থেকে সারাদেশে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা শুরু হলেও এ বিদ্যালয়ের ৩৯ জন শিশু স্কুলে গিয়েও পরীক্ষা না দিতে পেরে ফিরে গেছে। পরীক্ষার দিনে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে তারা আর এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থি নেই। এ অবস্থায় বছরের মাঝামাঝি সময়ে অভিভাবকেরা সন্তানদের শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়ে গেছেন।
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার একমাত্র সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আরএসকেএইচ ইনস্টিটিউশন। মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ঘোষিত নিয়ম অনুযায়ী ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে সর্বমোট ১ শত ৬০ জন শিক্ষার্থি ভর্তি করা যাবে। কিন্তু বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কমিটি এ বছর বিভিন্ন অভিভাবকদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে অতিরিক্ত ৩৯ জন শিক্ষার্থি ভর্তি করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নাসিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিককালে কয়েক কোটি টাকার আর্থিক দূর্নিতির অভিযোগ ওঠে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল স্কুল ফাণ্ড থেকে ধুমপানের লাখ টাকা পরিশোধ। কিন্তু নানা তদবির তদারকির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক আবারও বিদ্যালয়ে যোগদানের সুযোগ পেলেও বছরের মাঝপথে বিপাকে পড়েছে ওই ৩৯ জন শিক্ষার্থি। শনিবার পরীক্ষার যাবতিয় প্রস্তুতি নিয়ে বিদ্যালয়ে গেলেও তাদের কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থি ফারজানা আকতার খাদিজার বাবা হারুনর রশিদ বলেন, মেয়েকে স্কুল ভর্তি করেছে। অথচ পরীক্ষার দিন ভর্তি বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন বছরের মাঝখানে আমার মেয়েকে নিয়ে কোথায় নিয়ে যাবো?
অপর শিক্ষার্থি নাফিজের বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, পরীক্ষার আগে পরীক্ষার ফি, মাসিক বেতন সব আদায় করে প্রবেশ পত্র দিয়েছে। অথচ এখন পরীক্ষা দিতে পারছে না। এখন অন্য কোন বিদ্যালয়েও ভর্তি করা যাবে না। প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের জন্যে আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যত নষ্ট হতে পারে না।
একই ধরণের বক্তব্য দিয়েছেন অন্যান্য শিক্ষার্থিদের অভিভাবকেরা। তাদের সন্তানেরাও পরীক্ষা দিতে না পেরে নিদারুন হতাশা প্রকাশ করেছে।
এ বিষয়ে আরএসকেএইচ ইনস্টিটিউশন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম নাসিরুল ইসলাম বলেন, বছরের শুরুতে কিছু ভুল হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পরবর্তিতে বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির সভাপতি মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কমিটির অনিয়মের কারণে এতগুলো শিক্ষার্থির একটি বছর নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।