মাগুরা প্রতিদিন : মাগুরার শ্রীপুরে নানা আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধে শ্রীপুর আঞ্চলিক বাহিনী তথা আকবর বাহিনীর অধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মরহুম আকবর হোসেন মিয়ার ৯৬তম জন্ম বার্ষিকী পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে অধিনায়ক আকবর হোসেন সংস্থার উদ্যোগে ১০ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় সংগঠন কার্যালয়ে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও কেক কাটা এবং তোবারক বিতরণ করা হয়।
অধিনায়ক আকবর হোসেন সংস্থার সভাপতি ও শ্রীকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুতুবুল্লাহ হোসেন মিয়া কুটি’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন খামারপাড়া সিনিয়র মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা শফিকুর রহমান, শ্রীপুর সরকারি এম সি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাওলানা আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, বীরমুক্তিযোদ্ধা শফিউদ্দিন জোয়ার্দার, বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা সর্দার, বীরমুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিয়া, শ্যামাপদ অধিকারী।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী আকবর হোসেন মিয়া ১৯৩২ সালে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার টুপিপাড়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে আকবর হোসেন মিয়া তার অনুসারীদেরকে নিয়ে একটি গেরিলা বাহিনী গড়ে তোলেন। ক্রমে এই বাহিনীতে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকলে সেটি ‘আকবর বাহিনী’ হিসেবে পরিচিতি পেতে শুরু করে। আকবর বাহিনী এসব অঞ্চলে হানাদারদের বিরুদ্ধে কমপক্ষে ২৭টি সশস্ত্র যুদ্ধ অংশগ্রহণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে এই বাহিনী ‘আকবর বাহিনী’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর মঞ্জুর এই বাহিনীর নাম পরিবর্তন করে ‘শ্রীপুর বাহিনী’ করেন। এই বাহিনী ৮ নম্বর সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন (পরবর্তীতে মেজর জেনারেল) এটিএম আবদুল ওয়াহহাবের নিয়ন্ত্রনাধীন থেকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ ডিসেম্বর তারিখে এই বাহিনী মাগুরা আক্রমণ করে পাকিস্তানী সৈন্যদেরকে পরাজিত করে মাগুরাকে মুক্ত এলাকা ঘোষণা করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আকবর হোসেন মিয়া শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ পদে ছিলেন।
১৯৬৫ সালে তিনি নিজ ইউনিয়ন শ্রীকোলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং টানা ২৪ বছর এই দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর আকবর হোসেন ৮৯ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন।
আকবর হোসেন মিয়া তার মুক্তিযুদ্ধের বিবরণ দিয়ে একটি বই প্রকাশ করেন, তার বইয়ের নাম মুক্তিযুদ্ধে আমি ও আমার বাহিনী। এই গ্রন্থে আকবর বাহিনীর নিয়মিত সদস্য হিসেবে ৩৩৩ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে ।