আবু বাসার আখন্দ, প্রতিদিন ডেস্ক : অনেকের রয়েছে নৈপুণ্য। অথচ প্রথা ভেঙ্গে স্বপনকে সমর্থন জানালেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর।
এমপি শিখরের এই সিদ্ধান্তে কে খুশি হলো আর হলো না সে প্রশ্ন পরের। অথচ সিদ্ধান্ত জানিয়ে তিনি নির্বিকার চলে গেলেন গোসল সারতে। ঘটনাটি মঙ্গলবার বিকালের। যেখানে ঘটনার শুরু থেকে শেষ কোথায়ও নিয়ম নীতির বালাই মানেন নি!
যেমনটি ভাবছেন মোটেও তা নয়। ঘটনা নয় কোন রাজনৈতিক। রাজনীতির মাঠও নয়। বিষয় ৮৫ আর ৮৭’র মধ্যকার দ্বন্দ্বের।
মঙ্গলবার বিকালে মাগুরা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হলো ঈদুল আযহা উপলক্ষে ১৯৮৫ আর ১৯৮৭ এসএসসি ব্যাচের মধ্যকার প্রিতি ফুটবল ম্যাচ।
খেলার শুরুতে সিদ্ধান্ত হলো প্রতি দলে ১১ জন নয়, খেলবেন ১৫ জন করে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত কেবল মুখেই। খেলার মাঝ পর্যায়ে এসে দেখা গেলো মাঠের ভিতর ৩৭ জন। কোন দলে কয়জন সেটি গুনতে গিয়ে আরেক বিপত্তি। আগের সংখ্যাও ঠিক নেই।
বৃষ্টি চলছে, চলছে খেলাও সমান তালে। খেলোয়াড়দের মধ্যে কে ছিল না সেটিও ছিল বড় প্রশ্ন। এমপি সাইফুজ্জামান শিখর, সাবেক ছাত্রনেতা ভিপি জাহাঙ্গীর, সাংবাদিক শিপু খন্দকার, এক সময়ে ঢাকার মাঠ কাপানো খেলোয়াড় আলি কদর, কলেজ শিক্ষক সঞ্জয় জামান বিপু আরও কত খেলোয়াড়।
প্রিতিম্যাচ। রেফরি হিসেবে আছেন স্বপন। কিন্তু নেই লাল-হলুদ কোন কার্ডই। বাধ্য হয়ে গায়ের লাল গেঞ্জি খুলে প্রদর্শন করলেও কেউ মাঠ থেকে বেরিয়ে যায়নি। বরং দেখা গেলো ৩৭ জনের জায়গা আরো দুই জন বেড়ে গেছে।
খেলায় ধারা ভাষ্যকারের জায়গা দখল করেছেন সুবক্তা মহিউদ্দিন মহি। কিন্তু খেলা শেষ হলেও তার ধারাভাষ্য থেকে বোঝা গেলো না, ৮৫ না ৮৭ কারা পেলো জয়।
খেলার মাঠে এক সময়ে বাংলা বাজারের সেরা সাংবাদিক শিপু খন্দকার ৮৫’র পক্ষে গোলবার রক্ষার দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেখানে সেরা নৈপুণ্য তার পূরণো অতিতকে স্মরণ করিয়ে দিলো। আবার একই দলের খেলোয়াড় সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক ফরিদ ৮৭ খেলোয়াড়দের আঘাত ছাড়াই মাঠের মধ্যে শুয়ে পড়লেও পুরো খেলা উপভোগ করেছেন দর্শকরা। উপভোগ করেছেন সাইফুজ্জামান শিখরের সারামাঠ জুড়ে খেলার পারদর্শিতা দেখে।
দর্শক সারিতে বিচারপতি পিপুল, জাতীয় দলের খেলোয়াড় লাজুক, ইউনুস, উজ্জ্বলরা প্রিতিম্যাচের ঔজ্জ্বল্য বাড়িয়েছেন। একই ভাবে বরাবরের মতোই খেলার মাঠের প্রাণ ছড়ানো দর্শক আনিসুজ্জামান সাচ্চু ছিলেন সরব। দলের পক্ষে গোল হওয়ায় বৃষ্টির মধ্যেও ছাদখোলা মাথায় মাঠের মাঝে গিয়ে উল্লাস করেছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা ফারুকুজ্জামান ফারুকও।
ফাউলের খেলা। হঠাৎ খেলা বন্ধ। দুই দল মুখোমুখি। মাঠের বাইরে থেকে দৌড়ে গিয়ে ঢাল তলোয়ার বিহীন রেফারি খেলা বন্ধের বাঁশি বাজালেন।
খেলা শেষ। কিন্তু কেউ যায় না মাঠ থেকে। চলছে ৮৭’র খেলোয়াড় এমপি সাইফুজ্জামান শিখরের সঙ্গে সেলফি তোলার প্রতিযোগিতা। সেসব পর্ব শেষে পুরস্কার বিতরণী পর্বে কাউকে দেয়া হয়নি টিন কাঠের শিল্ড, আয়না চিরুনি কিংবা হাল জামানার ট্রফি। তবে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ ঘোষণা করলেন খেলোয়াড় এমপি অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর। তিনি জানালেন পুরো মাঠে সেরা খেলেছেন রেফারি স্বপন। তিনিই সেরা।
এমপি’র বিচারটি কেমন হলো!
নিয়ম ভেঙ্গে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচনের ক্ষেত্রে এমন সিদ্ধান্ত মানবেন কিনা সেই ভাবনায় কপালে ভাঁজ দেখা যায় বাংলাদেশ সরকারের মান্যবর বিচারপতি খায়রুল আলম পিপুলের। আর এমপি সদলবলে কলেজ পুকুরে নামলেন গোসল সারতে।