আজ, বুধবার | ৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | বিকাল ৪:১০


মাগুরার মহম্মদপুরেও ব্যক্তি আক্রোশে ব্যবসায়িকে ১ বছর সাজা দেন নাজিম উদ্দিন

মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : বিতর্কিত আরডিসি নাজিম উদ্দিন কুড়িগ্রাম যাওয়ার আগে একই দায়িত্বে ছিলেন মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলাতে। সে সময় তিনি সাংবাদিক রিগ্যানের মতোই ব্যক্তি আক্রোশে স্থানীয় ঔষধ ব্যবসায়ী আবু জাফর বাদশা ফকিরকে মোবাইল কোর্টে এক বছরের সাজা দেন। এ ছাড়াও নানা বিষয় নিয়ে তিনি স্থানীয় সাধারণ মানুষের সাথে তিনি বিরোধে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার তৎকালিন এসিল্যাণ্ড নাজিম উদ্দিনের আক্রোশের শিকার আবু জাফর বাদশা ফকির, মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটন, ব্যবসায়ী মেজবাহুল ইসলামসহ আরো অনেকের অভিযোগ, নাজিম উদ্দিনের মতো সরকারি কর্মকর্তা অতিতে কখনোই এখানে দেখা যায়নি। প্রকৃত অর্থে তিনি একজন অর্থ পিশাচ শ্রেণীর মানুষ।

ঔষধ ব্যবসায়ী বাদশা ফকির জানান, মহম্মদপুরে কর্মরত অবস্থায় তিনি সরকারি খাসজমি ইজারা বন্দোবস্ত দেয়ার উদ্যোগ নেন। এ সময় যার কাছ থেকে যেমন খুশি অর্থ নিয়ে এসব বন্দোবস্ত দেন। কিন্তু সরকারি জমির সঙ্গে আমার নিজের জমি রয়েছে। যেটি নিয়ে মামলা চলছে। কিন্তু বিরোধপূর্ণ এই জমির ঝামেলা মিটিয়ে দেয়ার কথা বলে তিনি আমার কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা নেন। কিন্তু বিষয়টির সমাধান করে না দেয়ায় টাকা ফেরত চাইলে তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। শুয়ারের বাচ্চা বলেও চিৎকার করে ওঠেন। পরে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে ১ বছরের জেল এবং ২ লক্ষ টাকা কারাদণ্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাসের জেল দেন।

বাদশা ফকির বলেন, আমি ২ মাস ৩ দিন জেল খাটার পর হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছি। কিন্তু এ অবিচারের জন্যে তার শাস্তি চাই|

মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সিদ্দিকী লিটন বলেন, নাজিম উদ্দিন নহাটা বাজারে পেরিফেরির কথা বলে সেখানকার স্থায়ী ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদের চেষ্টা চালান। তার কর্মচারিদের মাধ্যমে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করেন। যারা প্রতিবাদ করতে গেছে গেছে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে ভাংচুর চালান।

মহম্মদপুর বাজারের রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী মেসবাহুল ইসলাম বলেন, আমার চাচা আফসার উদ্দিন মাস্টারের জায়গা তিনি অন্য লোকের নামে ইজারা দিয়ে দেন। এ ঘটনায় প্রতিবাদ করায় তিনি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে ২ মাস ব্যবসা বন্ধ করে দেন।

মহম্মদপুর উপজেলায় এসিল্যাণ্ড হিসেবে কর্মরত অবস্থায় তিনি এরকম অসংখ্য ঘটনায় জড়িয়ে নানা বিতর্কের জন্ম দেন। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা থাকায় অধিকাংশ মানুষ টু শব্দটি পর্যন্ত করতে সাহস পায়নি। তবে সে সময় নহাটা বাজারের ব্যবসায়ীরা তার অপসারণ দাবি করে বাজারে বিক্ষোভ করেন।

এসব বিষয় নিয়ে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিনের সঙ্গে কথা যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, স্থানীয় কিছু মানুষ সরকারি জায়গা দখল করে রয়েছে। তাদের উচ্ছেদ করতে যাওয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ নিয়ে উত্থাপন করেছে।

এদিকে সোমবার দুপুরে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ নাজিম উদ্দিনের বিচার চেয়ে মহম্মদপুর উপজেলা সদরে মানববন্ধন সমাবেশ করেছে।

এ বিষয়ে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, তিন মাস আগে ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে কেউ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নিয়ে আসেনি। তবে কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নিয়ে আসলেও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন...




©All rights reserved Magura Protidin. 2018-2022
IT & Technical Support : BS Technology