মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : মাগুরার শ্রীপুরে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ এবং সেই ঘটনার ভিডিও ধারণের ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসি মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত দুই আসামিকে আটক করে পুলিশে দিলেও শ্রীপুর থানা পুলিশ তাদেরকে সিগারেট চুরির পুরণো মামলায় ঢুকিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসি জানায়, মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে উপজেলার চরশ্রীপুর গ্রামের এক গৃহবধূ নিকটাত্মিয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্যে বরিশাট গ্রামে যায়। সেখানে মাজেদা ফিলিং স্টেশনের কাছে পৌঁছলে ওই গ্রামের সাজ্জাদ মোল্যার ছেলে রবিউল ইসলাম গৃহবধূটির পিছু নেয়। এ সময় তিনি রক্ষা পেতে দৌড়ে ওই গ্রামের শ্যামলিদের বাড়ির উঠোনে গিয়ে আছড়ে পড়ে। শ্যামলির মা তানিয়া বেগম ঘর থেকে বের হয়ে আসলে ছেলেটি সেখান থেকে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর মেয়েটি ওই বাড়ি থেকে বের হলে লম্পট রবিউল তার প্রতিবেশি আজিজ বিশ্বাসের ছেলে আনিচকে সঙ্গে নিয়ে গৃহবধূকে ধরে নিয়ে যায় নদীর ধারে শ্মশান ঘাটে।
এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর বাড়ির কেউ ভয়ে সাংবাদিকদের কাছে কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করে তার এক আত্মীয় বলেন, প্রথমেই তারা মেয়েটিকে ছুরি দেখিয়ে সোনার চেন এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। তারপর মুখ বেধে শ্মশানের জঙ্গলে নিয়ে একজন শারীরিকভাবে নির্যাতন চালায়। আর অপর যুবক সেটি ভিডিও করতে থাকে। এ সময় তার চিত্কারে কয়েকজন এগিয়ে আসলে লম্পট দুই যুবক পালিয়ে যায়।
এদিকে ঘটনার পর স্থানীয় শ্রীকোল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুতাসিম বিল্লাহ বিষয়টি জানতে পেরে অভিযুক্ত দুইজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। তবে শ্রীপুর থানা পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন কিংবা এ সংক্রান্ত কোন মামলা না দিয়ে নানারকম নাটক তৈরি করেন। পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওই গৃহবধূকেই পতিতা সাজাতে উঠে পড়ে লেগে যায় বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
মুতাসিম বিল্লাহ সংগ্রাম বলেন, ঘটনার পরপর আমি মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেছি। তাৎক্ষণিকভাবে সে শারীরিক নির্যাতনে কথা স্বীকার করেনি। কিন্তু সোনার চেইন ছিনতাইয়ের কথা জেনে তাদেরকে পুলিশে তুলে দেয়া হয়েছে। তবে নির্যাতনের কোন ঘটনা ঘটে থাকলে তাদের বিচার হওয়া উচিত।
মাগুরার চর শ্রীপুরের সংখ্যালঘু পরিবারের গৃহবধূ নির্যাতনের বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ধর্ষণের কোন অভিযোগ পাইনি। তবে শুনেছি ওই মহিলার চরিত্র খারাপ। এটি একটি মিউচুয়াল কনটাক্টের ঘটনা। কোন কিছুর বিনিময়ে সে ওই দুই ছেলের সাথে জঙ্গলে গিয়েছিল। যেহেতু ইউপি চেয়ারম্যান ছেলে দুটিকে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তাই আটকে রাখার জন্যে তাদেরকে নাকোল বাজারে সিগারেট চুরির একটি মামলায় ঢুকিয়ে চালান করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে সর্বশেষ খবর অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতেই শ্রীপুর থানায় এ ঘটনায় ধর্ষন ও পর্ণগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে।