মাগুরা প্রতিদিন ডেস্ক : রেল গাড়ীতে কেউ চড়ুক বা না উঠুক, এর প্রতি অধিকাংশ মানুষের আকর্ষণ কিংবা আগ্রহ রয়েছে। বাঙ্গালীরা এর ব্যতিক্রম নয়। ছোট বড় সবার স্মৃতিতেই রেলগাড়ী একটি বিশেষ জায়গা রয়েছে।
রেলওয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো পরিবহন সংস্থা । ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর চুয়াডাংগা জেলার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়া জেলার জগতি পযর্ন্ত ৫৩:১১ কি:মি: ব্রডগেজ রেল লাইন চালুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে রেলওয়ে যাত্রা শুরু হয়।
রেল খাতের টেকসই উন্নয়ন এবং সেবার মানোন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে বর্তমান ও ভবষ্যিত্ রেল পরিবহন চাহিদা মেটাতে রেলপথ মন্ত্রণালয় অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং সরকারি রেলপথ পরিদর্শন অধিদপ্তর রেলপথ মন্ত্রণালয়াধীন দুটি সংস্থা রয়েছে ।
রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস-
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে রেলওয়ের সম্পদ ও জনবলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।
স্বাধীনতা পরবর্তীতে যুদ্ধ বিদ্ধস্ত রেলযোগাযোগ ব্যবস্থা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে নতুন যাত্রা শুরু হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত “রেলওয়ে বোর্ড” কর্তৃক পরিচালিত হতো এবং ১৯৭৩ সালে “যোগাযোগ মন্ত্রণালয়” এর সাথে রেলওয়ে সংযুক্ত হয়।
তত্কালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক নির্দেশনায় যমুনা নদীর উপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতুতে ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন রেল সংযোগ চালু করার ফলে পশ্চিমাঞ্চলের সাথে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর যোগাযোগ মন্ত্রণালয় হতে “রেলপথ মন্ত্রণালয়” গঠন করা হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্ব ও পশ্চিম, এ দুটি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে।
পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর চট্টগ্রামে আর পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহীতে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, পাকশী (পাবনা) ও লালমনিরহাট-এ চারটি বিভাগে বিভক্ত।
বাংলাদেশের ৪৪টি জেলায় রেলপথ রয়েছে. আরো ১৩টি জেলায় রেলপথ নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণের কাজ চলছে (মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, মেহেরপুর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, মাগুরা, বান্দরবান ও কক্সবাজার)। ২০৪৫ সাল নাগাদ অন্যান্য জেলাকেও রেলপথ নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে (লক্ষীপুর, শেরপুর, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও ভোলা)।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে ২১৫১.৭৯ কিঃমিঃ ও পশ্চিমাঞ্চলে ২১৮৯.৭৯ কিঃমিঃ মোট ৪,৩৪১.৫৮ কিঃ মিঃ রেল লাইন রয়েছে।
সারাদেশে মোট ৪৬৭টি স্টেশন, ১৮০২ টি লেভেল ক্রসিং গেইট রয়েছে। রয়েছে ২০৭টি সচল লোকোমোটিভ ও ৬৩ টি অচল।
বাংলাদেশে ব্রডগেজ ও মিটার গেজ দুই ধরণের রেলপথ রয়েছে। ব্রড গেজের দৈর্ঘ পাশাপাশি ১মিটারের বেশী ও মিটার গেজের দৈর্ঘ্য ১মিটারের কম।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ২০৬টি মিটার গেজ ও ১৪৮টি ব্রডগেজসহ মোট ৩৫৪টি যাত্রীবাহী ট্রেন আছে যার ৬টি আন্ত:দেশীয় ও ৯০টি আন্ত:নগর।
রেলওয়েকে একটি জনবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ৩০.০৬.২০১৩ তারিখে ২০ বছর মেয়াদী একটি মাস্টার প্ল্যান অনুমোদন করে।মাস্টার প্ল্যানে (২০১৬–২০৪৫) ৬ টি পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য ৫,৫৩,৬৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ২৩০টি প্রকল্প অর্ন্তভূক্ত রয়েছে। সরকারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সাথে সঙ্গতি রেখে রেলওয়ে মাস্টার প্ল্যানে অর্ন্তভূক্ত প্রকল্প পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।