মাগুরা প্রতিদিন : মাগুরার শ্রীপুরে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের মাধ্যমে বণ্ঠনের জন্যে বরাদ্দকৃত বিভিন্ন ভাতার দাবি করায় মাগুরার শ্রীপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান নির্বাচিত তিন ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আহত ওই তিন ইউপি সদস্য হলেন মদনপুর ওয়ার্ডের আব্দুল আলিম, খড়িবাড়িয়া ওয়ার্ডের আব্দুল মজিদ এবং তখলপুর ওয়ার্ডের মকবুল হোসেন। এদের মধ্যে আব্দুল আলিম ও আব্দুল মজিদ গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাসপাতালে চিকিত্সাধিন আহত ইউপি সদস্য আব্দুল আলিম জানান, নির্বাচনের পর থেকে গত আড়াই বছর তাদেরকে পরিষদের ঢুকতে দেয়া হতো না। সরকারের বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম তাদেরকে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যানের পছন্দের লোক দিয়ে করানো হয়। তারা নির্বাচিত সদস্য হলেও চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মদনপুর ওয়ার্ডে ছাত্রদলের সাবেক উপজেলা সভাপতি বাবলু মিয়া, খড়িবাড়িয়া ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থী আব্দুল মতিন ও তখলপুর ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থী কাজী আব্দুর রউফকে দিয়ে কাজ করিয়ে যাচ্ছেন। তাই বুধবার দুপুরে তারা তিনজন ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের কক্ষে গিয়ে ওই সমস্ত অবাঞ্চিতদের বাদ দিয়ে নিজেদের অনুকুলে আসন্ন ঈদের জন্যে ভিজিএফ এর চাউল সহ বিভিন্ন ভাতার দাবি জানান। এতে চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে আব্দুল আলীমকে চেয়ারম্যান কিল ঘুষি মারতে শুরু করেন। এ সময় চেয়ারম্যানের কক্ষে থাকা তার অনুসারী বুলেট ও আশরাফুল তাদের উপর হামলা চালায়। তারা চেয়ারম্যানের কক্ষে থাকা হকস্টিক ও লোহার রড দিয়ে তাদের পিটিয়ে জখম করেন। প্রাণভয়ে ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন এবং আব্দুল মজিদ দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে চেয়ারম্যানের লোকজন গেটে তাদেরকে আটকিয়ে বেদম মারধর করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এদিকে ইউপি সদস্যদের উপর হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই তাদের গ্রামের লোকজন জড়ো হয়ে চেয়ারম্যান মশিউর রহমানের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় চেয়ারম্যান সমর্থিতরাও পালটা হামলা চালালে উভয় পক্ষের মধ্যে পড়ে তৈয়ব খান ও আব্দুল হান্নান নামে দুই যুবলীগ নেতা আহত হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, আমি একটি মার্ডার মামলার আসামী। ওই তিন মেম্বর সেই মামলায় আমার বিরোধীতা করেছিলো। যে কারণে তাদের সাথে আমার একটু দূরত্ব আছে। এ ছাড়া তারা গত আড়াই বছরে পরিষদে আসে না। কোনো খোঁজ খবরও নেয় না। উলটো বিভিন্ন সুবিধা পাওয়ার জন্যে তারা আমাকে চার্জ করেছিলো। যা নিয়ে তাদের সঙ্গে ঝামেলা তৈরি হয়েছে। কিন্তু তাদেরকে মারপিট করা হয়নি।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ তাসমীম আলম বলেন, এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ তিনি পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।