নিজস্ব প্রতিবেদক : মুক্তিযুদ্ধের সময় ৮ নং সেক্টরের অধীনে শ্রীপুর থানাতে গড়ে ওঠা আলোড়ন সৃষ্টিকারী ‘শ্রীপুরবাহিনী’ তথা আকবরবাহিনীর সহঅধিনায়ক, সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা, আজীবন তেজদীপ্ত মোল্লা নবুয়ত আলীর মৃত্যুতে বিভিন্ন মহল থেকে শোক প্রকাশ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভোর ৫ টার দিকে বরিশাট গ্রামে নিজস্ব বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শ্রীপুরে গভীর শোক নেমে এসেছে। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি অসুস্থ হয়ে শয্যাশয়ী ছিলেন।
তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. সাইফুজ্জামান শিখর। আনুষ্ঠানিকভাবে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন মাগুরা জেলা প্রশাসক ডক্টর আশরাফুল আলম, পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পঙ্কজ কুন্ডু, পৌর মেয়র খুরশিদ হায়দার টুটুল, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিউজা উল জান্নাহ।
শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আফম অব্দুল ফাত্তাহ, জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরি কমিটির সদস্য জাহিদুল আলম, শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক হুমাউনুর রশীদ মুহিত, শ্রীকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুতুব উল্লাহ কুটি, মাগুরা জেলা জাসদের সভাপতি ওহিদুল ইসলাম ফণি, সাধারণ সম্পাদক সমীর চক্রবর্তী, শ্রীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ড. মুসাফির নজরুল, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক সাংবাদিক জাহিদ রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মুক্তিযুদ্ধে মোল্লা নবুয়ত আলীর অবদান কিংবদন্তীতূল্য। অধিনায়ক আকবর হোসেনের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই শ্রীপুরে আঞ্চলিকবাহিনী গড়ে তুলতে অনন্য ভূমিকা রাখেন। এই বাহিনীর হয়ে তিনি বিভিন্ন সম্মুখ সমরে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধের আগে তিনি ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু থেকে করে উনসত্তরের গণঅভূত্থানসহ সব আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রাখেন। তিনি একসময় মাগুরা মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর তিনি মুশতাক সরকারের আমলে সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্যাতিত হন এবং কারাজীবন ভোগ করেন। মারা যাওয়ার আগে তিনি দীর্ঘদিন মাগুরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।
মোল্লা নবুয়ত আলী বাকপটু, লড়াকু, তেজদীপ্ত নেতা হিসেবে সবার কাছে বরাবরই নমস্য ছিলেন।