মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : চলে গেলেন কবি ও সাংবাদিক বিএমএ হালিম। মাগুরার নবগঙ্গা সাহিত্য গোষ্ঠির সাধারণ সম্পাদক বিএমএ হালিম ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে চিকিত্সাধিন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৫ বছর।
মাগুরার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গণের পুরোধা ব্যক্তিত্ব আবদুল হালিমের মৃত্যুতে সারা মাগুরায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার বিদেহি আত্মার শান্তি কামনায় মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করা হয়েছে।
মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণের কারণে আবদুল হালিমকে গত ২২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় পরদিন বুধবার ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেখানেই চিকিত্সাধিন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন পুত্র, দুই কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহি রেখে গেছেন।
মাগুরার সদর উপজেলার বরুণাতৈল গ্রামের সন্তান বিএমএ হালিম নব্বই দশকের শুরুতে সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি ঢাকায় একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন। সে সময় তিনি তার সৃষ্ট সাহিত্য কর্মের জন্যে দেশের খ্যাতনামা কবি সাহিত্যিকদের সান্নিধ্য লাভ করেন। প্রসংশা অর্জন করেন সমসাময়িক এবং অগ্রজ কবি সাহিত্যিকদের। দরিদ্র পরিবারের সন্তান আবদুল হালিম ঢাকায় অবস্থানকালিন শারীরিক অসুস্থ্যতায় পড়লে মাগুরায় ফিরে আসতে বাধ্য হন। সেইসাথে প্রথাগত সাহিত্য সাংবাদিকতার সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে যায় তার। তারপরও ৯১তে তিনি লিখে ফেলেন ‘রকমারি গণতন্ত্র’ শিরোণামে তার শ্রেষ্ঠ কবিতাটি। এছাড়াও তার লেখা অসংখ্য কবিতা তাকে কবি স্বীকৃতি অর্জনে সহায়তা করে।
মাগুরার সাংস্কৃতিক অঙ্গণেও আবদুল হালিমের অবদান অনস্বীকার্য। লিখেছেন অসংখ্য গান। জেলার অসংখ্য গুণি মানুষকে নবগঙ্গা সাহিত্য গোষ্ঠির সম্মাননা প্রদানের মধ্য দিয়ে সামাজিক মর্যাদার দানের পাশাপাশি মূল্যায়নের চেষ্টা করেছেন। অনেক বছর সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জেলার শিল্প সাহিত্যের সঙ্গে যাদের যোগসূত্র সেইসব মানুষদের একত্রে জড়ো করেছেন। বছরের পর বছর ধরে সৃষ্টি করেছেন মিলন মেলার।
জেলার শিল্প সাহিত্যের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সেই মানুষটির বিদায়ে শোক প্রকাশ করেছেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর, পৌর মেয়র খুরশিদ হায়দার টুটুল, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু নাসির বাবলু, জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা জাহিদুল আলম।
শোক প্রকাশ করেছেন মাগুরা প্রেসক্লাব সম্পাদক শামিম খান, মুক্তিযুদ্ধের গবেষক মাগুরা প্রতিদিন ডটকম পত্রিকার সম্পাদক জাহিদ রহমান।
শোক জানিয়ে পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছেন মাগুরার প্রাক্তণ জেলা প্রশাসক মুহা. মাহবুবর রহমান, আতিকুর রহমান।
শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন মাগুরা জেলা সাংস্কৃতিক জোট, লেখক জোট, মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন ফাউণ্ডেশনের নেতৃবৃন্দ। পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছেন অনেকেই।
মরহুম আবদুল হালিমের বড় ছেলে বিএম সুজন জানান, বাবার মরদেহ মাগুরাতে নিজ বাড়ি বরুণাতৈল গ্রামে পৌঁছনোর পর শনিবার নামাজে জানাযা শেষে দাফন করা হবে।