মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : মাগুরার মহম্মদপুরে হিন্দু পরিবারের এক কিশোরী মেয়ের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবির ঘটনায় মিলন ওরফে কামাল নামে এক যুবককে পুলিশ আটক করেছে।
অন্যদিকে মেয়েটির নিজে ধারণকৃত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উঠেছে যেখানে মেয়েটি তার পরিবার ঘনিষ্ট অপর এক ব্যক্তির দ্বারা শারীরিক নিপীড়নের শিকার হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ অবস্থায় থানায় মেয়েটির মায়ের অভিযোগ এবং মেয়েটির ভিডিও বার্তার ভিন্নতা নিয়ে জন সাধারণের মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
মাগুরার মহম্মদপুর থানা পুলিশের হাতে আটক মিলন ওরফে কামাল ওই উপজেলার মহেশপুর গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে।
পুলিশ জানায়, মিলন ওরফে কামাল এক সময় সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলো। কিন্তু ২০১৪ সনে সেখান থেকে চাকুরিচ্যুত হওয়ার পর সে এলাকায় ফিরে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা চালিয়ে আসছে।
সম্প্রতি মিলন তার গ্রামের পাশে মধুপুর গ্রামের হিন্দু পরিবারের একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। সেই সম্পর্কের জেরে ঘনিষ্টতার সূত্রে সে মেয়েটির মোবাইল ফোন থেকে তার ব্যক্তিগত কিছু ছবি কৌশলে নিজের মোবাইল ফোনে নিয়ে নেয়। পরে ওইসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার কথা বলে মেয়েটির পরিবারকে ভয় ভীতি দেখায়। ৬ এপ্রিল মিলন তার অপর এক সঙ্গীকে নিয়ে মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে তার চাচার কাছে একইরকম ভয় দেখিয়ে ২০ লক্ষ টাকা দাবি করে। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় অন্তত ২ লক্ষ টাকা দুইদিনের মধ্যে পরিশোধের হুমকি দিয়ে আসে। এ অবস্থায় মেয়েটির পরিবার প্রতিবেশিদের কাছে বিষয়টি জানালে তারা ৭ এপ্রিল বিকালে মহম্মদপুরের কালিশঙ্করপুর বাজারে ছেলেটিকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়।
এদিকে খবর পেয়ে মহম্মদপুর থানা পুলিশ মিলন ওরফে কামালকে মোবাইলসহ আটক করে। যেখানে মেয়েটির কিছু ছবি পাওয়া যায়। এ ঘটনার বিষয় উল্লেখ করে মেয়েটির মা মহম্মদপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বলেও জানা গেছে।
মহম্মপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারকনাথ বিশ্বাস মেয়েটির মায়ের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করছেন। অভিযুক্ত কামালের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে একই ধরণের আরও অভিযোগ রয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
তবে ওই মেয়েটির নামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উঠেছে। যেখানে সে নিজের নাম পরিচয় প্রকাশ করে তার পরিবার ঘনিষ্ট অপর একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেছে।
নিজের ধারণকৃত ওই ভিডিওর মাধ্যমে মেয়েটি জানিয়েছে যে, তার উপর পরিবার ঘনিষ্ট ওই ব্যক্তি শারীরিক নিপীড়ন চালিয়ে আসছে। ওই ঘটনা থেকে সে মুক্তি চায় বলেও মেয়েটি তার আর্তি জানিয়েছে।
তবে মেয়েটির উল্লেখিত নিপীড়নকারিকে আটক করা গেছে কিনা সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।