আজ, বুধবার | ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | রাত ২:২৬

ব্রেকিং নিউজ :
মাগুরায় প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ মাগুরায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন জাহিদুর রেজা চন্দন ও নবীব আলী মহম্মদপুরে চেয়ারম্যান পদে ৯ জন শালিখায় ৫ জনের মনোনয়ন পত্র জমা স্মৃতির আয়নায় প্রিয় শিক্ষক কাজী ফয়জুর রহমান স্মৃতির আয়নায় প্রিয় শিক্ষক কাজী ফয়জুর রহমান মাগুরা সদরে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৭ শ্রীপুরে ৪ প্রার্থীর মনোনয়ন জমা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিক কাজী ফয়জুর রহমানের ইন্তেকাল মাগুরার শ্রীপুরে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা! শায়লা রহমান সেতুর নির্মম মৃত্যুর বিচারের দাবিতে জাসদের মানববন্ধন সমাবেশে মাগুরায় ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগে মামলা-মানববন্ধন

বেলের মালাতেই তাদের রুটি-রুজি

মাগুরা প্রতিদিন : মাগুরার মহম্মদপুরের বাবুখালি ইউনিয়নের সেলামতপুর গ্রামে বেলের মালা তৈরি করে শতাধিক নারী জীবন-জীবিকা ধারণ করছেন।

নারীদের নিখুঁত হাতের এ মালা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাইরেরও যাচ্ছে।

সেলামতপুর গ্রামে সরজমিন ঘুরে দেখা যায় ,বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় হিন্দু নারীরা তাদের গৃহস্থালির ফাঁকে ফাঁকে এই কাজ কাজ করছেন। কেউ কেউ আবার এই মালা তৈরির কাজকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। সকাল থেকে দুপুর কিংবা বিকালে কাটা হয় এ মালা।

সেলামতপুর গ্রামের মিনতী বিশ্বাস জানান, আমি ১০ বছর ধরে এ বেলের মালা বানাচ্ছেন তারা। গৃহস্থালির কাজের ফাঁকে ফাঁকে এই কাজ। একটি বেলে ২টি মালা তৈরি হয়। ৮০টি মালায় হয় ১ পোন। আর ১ পোন মালার বাজার পাইকারি দর ৩শ’ টাকা।

বিভিন্ন স্থানের মালার মহাজনরা এ মালা আমাদের কাছ থেকে নিয়ে যায়। হিন্দুদের বিয়েতে এই মালা বেশি চলে। বর্তমান বাজারে বেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা বেল সংগ্রহ করতে পারছি না। কারণ বেল সব মৌসুমে পাওয়া যায় না। এখন বেল পাওয়া যাচ্ছে। তাই আমরা বিভিন্ন গ্রাম থেকে বেল সংগ্রহ করছি। তারপর সারা বছর বেলের মালা তৈরি করি।

মালা কারিগর বিষ্ণু প্রিয়া বলেন, ৪০ বছর ধরে মালা কাটার কাজ করছি। আমার নিজের কোনো জমি নেই। শুধু বসতবাড়িটুকু আছে। বর্তমানে বেলের সংকট থাকায় আমরা আগের মতো বেশি পরিমাণে মালা কাটতে পারছি না। প্রথমে বাঁশের একটি ছোট লাঠির মাথায় ছাতার চিকট ছিক লাগানো হয়। লাঠিতে একটি শক্ত সুতালি লাগানো হয়, যাতে লাঠি ঘোরানোর সময় ছিঁড়ে না যায়। একটি বেলের ভিতরের অংশতে প্রথমে মালার ছক তৈরি করা হয়। এরপর বেলের উল্টোদিকে আবার লাঠি ঘুরিয়ে কাটা হয় মালা। এক একটি খুব ক্ষুদ্র আকৃতি হয়। এ ক্ষুদ্র মালাগুলো রাখা হয় একটি সরায়। তারপর বাঁশের চিকট কাটির মধ্যে কাটিমের সুতার সাহায্যে ভরা হয় মালা। বর্তমানে সব জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা মালার কারিগররা নানা সমস্যার মধ্যে আছি। সরকার থেকে আমরা কোনো সহযোগিতা পাই না। অনেক সময় আমাদের পরিবার চলে না।

অপর কারিগর নয়ন তারা জানান, ৩০ বছর ধরে এ কাজের সঙ্গে আমি জড়িত। বর্তমানে আমাদের মালা তৈরি পরিবার চলছে না। মহাজনরা আমাদের নিকট থেকে কম দামে কিনে তারা বেশি দামে বিক্রি করছে। প্রথমে বেল সংগ্রহ করে তা রোদে শুকাতে হয়। তারপর তৈরি হয় মালা। ভালো বেল হলে একটি বেলের আচা থেকে ৩ থেকে ৪টি মালা তৈরি হয়। এক্ষেত্রে বেলের আচা অবশ্যই শক্ত ও পরিপক্ক হতে হবে।

বেলের মালার মহাজন দেব দুলাল বিশ্বাস জানান, আমার বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। আমরা মহম্মদপুরের সেলামতপুর গ্রাম থেকেই বেশি মালা সংগ্রহ করি। আমরা বিভিন্ন মেলায়, কীর্তন উৎসব ও বিয়েতে বিক্রি করি। তাছাড়া বেলের মালা পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর, নড়াইল, রাজবাড়ী, কদমবাড়ীসহ ঢাকা-খুলনায় মহাজনদের কাছে বিক্রয় করা হয়। দিন দিন বেলের মালার চাহিদা বাড়ছে।

শেয়ার করুন...




©All rights reserved Magura Protidin. 2018-2022
IT & Technical Support : BS Technology