মাগুরা প্রতিদিন : মাগুরার শালিখা উপজেলার ছান্দড়া গ্রামে সজিব হাসান নামে ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে মিথ্যে চুরির অপবাদে নির্মমভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছে। হাসান মোল্যা নামে স্থানীয় এক মুরগি ব্যবসায়ী ওই শিশুটির দু’পায়ে লোহার পেরেক ঢুকিয়ে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেলেও রহস্যজনক কারণে শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা করা হয়নি।
অপরদিকে পুলিশ ঘটনার দিন ওই ব্যবসায়ীকে আটক করলেও পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা না করায় শনিবার তাকে ১৫১ ধারায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
শুক্রবার শিশুটির পরিবার এবং প্রত্যক্ষদর্শি এলাকাবাসী জানায়, শালিখা উপজেলার ছান্দড়া গ্রামের মুরগি ব্যবসায়ী হাসান মোল্যা মিথ্যে চুরির অপবাদ দিয়ে শুক্রবার দুপুরে সজিব নামের ওই শিশুটিকে দোকানের পাশে একটি বাড়িতে আটকে রাখে। পরে দু পায়ের বিভিন্ন স্থানে লোহার পেরেক ঢুকিয়ে নির্মম নির্যাতন করে। এ ঘটনার পর এলাকাবাসী পুলিশের সহায়তায় শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয়। পাশাপাশি শুক্রবারেই পুলিশ অভিযুক্ত মুরগি ব্যবসায়ীকে আটক করে।
নির্যাতনের শিকার শিশুটির বাবা কহিনুর মোল্যা ঘটনার দিন বিকালে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ওই মুরগি ব্যবসায়ীর দোকানে কিছুদিন আগে কে বা কারা চুরি করে। সেটি তারা জানতে পারেনি। অথচ শুক্রবার দুপুরে দোকানের সামনে আমার ছেলেকে পেয়ে আটকে রেখে নির্যাতন চালিয়েছে। দোকান মালিক হাসান মোল্যা আমার ছেলের দু’পায়ের বিভিন্ন স্থানে লোহার পেরেক ঢুকিয়ে নির্যাতন করে। পরে পুলিশকে জানানো হলে ছেলেকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে ভর্তি করি।
শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিত্সাধিন শিশুটিও ঘটনার পর তার উপর চালানো নির্যাতনের কথা স্বীকার করে।
এদিকে শনিবার দুপুরে শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে গেছে তার পরিবারের লোকেরা। তবে এই বিষয়ে থানায় কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।
গ্রামের চিহ্নিত প্রভাবশালি মহলের চাপে শিশুটির পরিবার থানায় মামলা দায়ের করে নি বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করলেও শিশুটির বাবা কহিনুর মোল্যা এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কিছু জানাতে রাজি হননি। উলটো নির্যাতনকারী ওই মুরগি ব্যবসায়ীকে নিজের মামাতো ভাই উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই বলে জানান।
শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিশারুল ইসলাম বলেন, খোজ নিয়ে জেনেছি নির্যাতনের শিকার শিশুটি এখন সুস্থ্ অবস্থায় চলাফেরা করছে। এলাকাবাসির কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর হাসান নামের ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের জন্যে শিশুটির পরিবারকে জানানো হলেও তারা মামলা না দেওয়ায় আটক ওই ব্যবসায়ীকে ১৫১ ধারায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।