মাগুরা প্রতিদিন : নাসির নামে মাগুরার এক যুবককে লিবিয়া পাঠানোর পর শারীরিক নির্যাতন করে ধারণকৃত ভিডিও পরিবারকে দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় অভিযূক্ত একটি আন্তর্জাতিক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মাগুরা সদর থানায় দায়েরকৃত মামলার সূত্র ধরে শুক্রবার কক্সবাজার সিআইডি পুলিশ বাদশা মিয়া ও আরজু বেগম ওই দুজনকে গ্রেফতার করে। তাদের বাড়ি কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানার পাহাড়িয়া খালীতে।
চক্রটি ভিকটিমদের পরিবারের কাছে ইমোতে কল দিয়ে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে মুক্তিপণ দাবি করত। এরপর ভিকটিমদের ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পাঠানো হতো। এই প্রক্রিয়ায় অনেক ভিকটিম সাগরে মৃত্যুবরণ করেছে, কিছু লোক উদ্ধার হয়েছে এবং অল্পসংখ্যক ভিকটিম ইউরোপে পৌঁছাতে পেরেছে।
পুলিশ জানায়, গত বছরের ডিসেম্বরে লিবিয়ায় যাওয়া মাগুরা সদরের আড়ুয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা নাছিরকে আটকে দেশে তার পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয়। পরে নাছিরের পরিবারের করা মামলায় বাদশা ও আরজুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার তদন্তকালে সিআইডি জানতে পারে, ভুক্তভোগী নাছির গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর চাচা ওমর আলীর মাধ্যমে ভারত ও দুবাই হয়ে লিবিয়া যান। সেখানে লিবিয়া প্রবাসী মাহবুবুর রহমান ছদরুলের তত্ত্বাবধানে তিনি টাইলসের কাজ করতেন। চার মাস আগে নাছিরকে লিবিয়ার অজ্ঞাতস্থানে মানবপাচারকারী চক্র কর্তৃক আটক করা হয়। পরে দেশে তার পরিবারের কাছে ইমোতে কল করে ১৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। মুক্তিপণ প্রদানের জন্য ভিকটিমের পরিবারকে বিভিন্ন বিকাশ ও ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠাতে বাধ্য করা হয়।
গ্রেপ্তার বাদশা মিয়া তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে একটি কারেন্ট একাউন্ট খুলে আরজু বেগমকে তা ব্যবহার করতে দেন। উক্ত একাউন্টে মোট ১২ লাখ ৫০ হাজার ৯১০ টাকা জমা হয় এবং ১০ লাখ ৯৭ লাখ ২৮৫ টাকা তোলা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা আদালতে আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে সংযোগ থাকার কথা স্বীকার করেছেন এবং এ বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলেও সিআইডি সূত্রে জানা গেছে।