মাগুরা প্রতিদিন ডটকম : মাগুরার শ্রীপুরে উপজেলা কৃষি অফিসের পরীক্ষামূলক ভারতীয় নাসিক এন- ৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে সফলতা এসেছে।

দেশে উৎপাদিত শীতকালীন পেঁয়াজ ফুরিয়ে যাওয়ার পর প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে এই জাতের পেয়াজ উপযোগী হয়ে উঠবে বলে কৃষি কর্মকর্তারা মনে করছেন।

পেঁয়াজ আমদানিতে ব্যয় হওয়া ডলার সংরক্ষণে এই জাতের পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে চাচ্ছে তারা।

পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে তাই দেশেই শুরু হয়েছে ভারতীয় নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার বর্ষা মৌসুমে উপজেলার ৩০ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ভারতীয় নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এই পেঁয়াজের বীজ, সার, পলিথিনসহ বীজতলা তৈরির সকল উপকরণ চাষিদের মধ্যে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিনামূল্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।

চাষীরা গত সেপ্টেম্বরে চাষিরা বীজতলা করেন। এরপর বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপণ করেছেন। নির্দিষ্ট সময় শেষে এখন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে।

তথ্যমতে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে উপজেলাতে ৩০ হেক্টর জমিতে এ পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। যার বিপরীতে উপজেলার ২২৫ জন চাষিকে এক কেজি বীজ, সারসহ বিভিন্ন উপকরণ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। আবাদকৃত জমি থেকে চলতি মৌসুমে হেক্টর প্রতি ১৮ মেট্রিক টন হিসেবে ৫৪০ মেট্রিক টন পেঁয়াজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

এদিকে ডিসেম্বরে প্রথম সপ্তাহ থেকে নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ মণ। লাল রঙের প্রায় প্রতিটি পেঁয়াজের ওজন হয়েছে ২৫০ থেকে ৩৫০ গ্রাম। বাজারে পেঁয়াজের দাম এখন কম হলেও ফলন ভাল হওয়ায় লাভের আশা করছেন তারা। অসময়ে চাষ এবং ফলন ভাল হওয়ায় অনেক কৃষক নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। আগামী বছর এ পেঁয়াজ চাষ আরো বৃদ্ধির সম্ভবনা রয়েছে।

উপজেলার আমলসার ইউনিয়নের কুদলা গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, আমি এই পেঁয়াজের চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছি। এক একটি পেঁয়াজের ওজন ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম হয়েছে। এই পেঁয়াজ তোলার পর এই জমিতে আবারো পেঁয়াজ লাগাবো।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী মেহেদি হাসান জানান, শীতকালে তাদের এলাকায় স্থানীয় ‘মুড়িকাটা’ নামের একটি জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়। বর্ষাকালে দেশে বারি পেঁয়াজ-৫ চাষ হয়। কিন্তু এই পেঁয়াজের বীজের খুব সংকট। এ জন্য বর্ষাকালে কোন পেঁয়াজই চাষ হতো না। এবার নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন চাষ হয়েছে। পতিত পড়ে থাকা জমিতে এই পেঁয়াজ চাষ করে কৃষকেরা বাড়তি টাকা আয় করেছেন।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা জানান, দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানো এবং আমদানি নির্ভরতা কমানোর উদ্দেশ্যে নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে প্রত্যাশার চেয়েও ভালে ফলাফল পাওয়া গেছে। এতে করে আগামীতে এই জাতের আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে।